বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: কিছুকাল আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া পৌলমী অধিকারীর নামটা অনেকেরই মনে থাকবে। ফুটবল ছিল তার কাছে নেশার মতো। বিভিন্ন বয়স ভিত্তিক টুর্নামেন্টে ভারতের জার্সি গায়ে চাপানোরও সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে আজ তিনি জোম্যাটোর ডেলিভারি গার্ল। তার একটি সাক্ষাৎকার ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিল যার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাতারাতি সেলিব্রেটি হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
খাওয়ার ডেলিভারি দেওয়ার মাঝে তার পায়ে বল নাচানোর ভিডিও নেটিজেনদের মন কেড়ে নিয়েছিল। ওই ভিডিও হয়তো তাকে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল কিন্তু সামগ্রিক পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। এখনো ডেলিভারির কাজ করেই সংসার চালাতে হচ্ছে। রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রীও আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তার আর্থিক সমস্যার কোন সুরাহা হয়নি।
ভাইরাল ওই ভিডিওতে তিনি জানিয়েছিলেন যে মাঠ এখনো ভালবাসেন, মিস করেন, কিন্তু তিনি নিরুপায়। ভিডিওতে আফসোস করে বলতে শোনা গিয়েছিল, “কেন ফুটবলের জন্য এত কষ্ট করতে গেলাম সেটা এখন মাঝেমধ্যে ভাবি! কিন্তু এখন কোনও উপায় নেই। পেট চালানোর জন্য একপ্রকার বাধ্য হয়ে এই পেশাকে বেছে নিয়েছি।” বেহালার শিবরামপুরের বাসিন্দা পৌলমী ভারতের অনূর্ধ্ব ১৬, অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, শ্রীলঙ্কা সমস্ত জায়গায় ফুটবল খেলেছেন। বেহালার বাড়িতে সাজানো রয়েছে সেই সমস্ত প্রতিযোগিতা গুলি থেকে প্রাপ্ত শংসাপত্র ও মেডেলগুলি। কিন্তু আজ যেন সেগুলো অর্থহীন।
তাকে আইএফএ থেকে একটি চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই চাকরি ছিল অস্থায়ী চাকরি এবং বাড়ি থেকে বহু দূরে। বেতনও ছিল না পর্যাপ্ত। তাই সেই চাকরির প্রস্তাবে না করে দিয়েছিলেন পৌলমী। সম্প্রতি খবর পাওয়া গিয়েছে যে রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও তাকে চুক্তিভিত্তিক চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই চাকরির ক্ষেত্রেও না করেছেন তিনি। রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত চাকরির ক্ষেত্রে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেই কারণ অবশ্য এখনও সম্পূর্ণ জানা যায়নি।
জানা গিয়েছে যে তার দাদা কোনো কাজ করেন না এখনো। গোটা সংসারের দায়িত্ব আপাতত তারই কাঁধে। তাই হয়তো চুক্তিভিত্তিক বা কম বেতনের কোনও চাকরি নিতে চাইছেন না তিনি। জোম্যাটোর ক্ষেত্রে প্রতিদিন পরিশ্রম করে যে টাকাটি রোজগার করেন তাও খুব বেশি নয়। এখনও আর্থিক কষ্ট কাটিয়ে ওঠার কোনও সম্ভাবনা দেখতে পারছেন না তিনি।