বাংলাহান্ট ডেস্কঃ হিন্দু দেব দেবীর মধ্যে দুর্গার একটি বিশেষ রূপ হল কাত্যায়নী (Kattyayoni Devi)। দেবী দূর্গার এই অংশটি মহাশক্তির অংশবিশেষ। দেবী দুর্গার নয়টি বিশিষ্ট রূপের মধ্যে দেবী কাত্যায়নী হল ষষ্ঠ রূপ। নবরাত্রি উৎসবের সময় তার পূজা প্রচলিত। শাক্তধর্ম মতে, দেবী কাত্যায়নী মহাশক্তির একটি ভীষণা রূপ রূপে পূজিত হয়। আবার ভদ্রকালী বা চণ্ডীর মতো যুদ্ধদেবী রূপেও তিনি পূজিতা হন।
খ্রিষ্টীয় পঞ্চম-ষষ্ঠ শতাব্দী নাগাদ রচিত মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত দেবীমাহাত্ম্যম্ পুরাণ গ্রন্থে দেবী কাত্যায়নীর বিষয়ে বর্ণিত আছে। এর পাশাপাশি একাদশ-দ্বাদশ শতাব্দীতে রচিত দেবীভাগবত পুরাণ গ্রন্থেও কাত্যায়নী দেবীর বর্ণনা করা আছে। পুরাণ মতে কৃষ্ণ যজুর্বেদের অন্তর্গত তৈত্তিরীয় আরণ্যকে কাত্যায়নীর দেবীর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। আবার একাধিক বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ, জৈন ধর্মগ্রন্থ এবং তন্ত্রগ্রন্থেও দেবী কাত্যায়নীর উল্লেখ আছে। কথিত আছে স্কন্দ, বামন ও কালিকা পুরাণ অনুযায়ী, মহিষাসুর বধের সময় দেবগণের ক্রোধতেজ থেকে এই দেবীর জন্ম।
কালিকা পুরাণে বলা হয়েছে ওড়িশায় দেবী কাত্যায়নী ও জগন্নাথের ক্ষেত্র। এছাড়াও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে কাত্যায়নী দেবীর পূজা করা হয়। অবিবাহিত মেয়েরা তাঁদের পছন্দমতো স্বামী পাবার আশায় এক মাস ধরে পদ্ধতি অনুসারে উপবাস করে কাত্যায়নী ব্রত পালন করে। এই সময় দেবীকে চন্দন, ধূপ, দীপ ইত্যাদি দিয়ে পূজা করা হয়।
আবার কথিত আছে, মকর সংক্রান্তির দিন শস্য উৎসব উপলক্ষে তামিলনাড়ুর মেয়েরা বৃষ্টি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা। এই প্রায় এক মাস সময়ে তারা দুগ্ধ বা দুগ্ধজাত খাদ্য গ্রহণ করেন না। এই সময় সকালে স্নান করে ভিজে বালিতে খোদিত কাত্যায়নীর মূর্তি পূজা করেন তারা ব্রত পালন করেন।
কাত্যায়নী দেবীর পূজা করলে সংসারে সুখ সমৃদ্ধি ফিরে আসে। ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বামা-মা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করার জন্যও অনেকে এই দেবীর পূজা করে থাকেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে শুদ্ধ ভাবে লাল বস্ত্র পড়ে এই বেদীর পূজা করতে হয়। পূজার আগে ঠাকুররে আসন ভালো করে পরিস্কার করে দেবীর মূর্তি বা ছবিতে লাল কাপড় পড়াতে হয়। দেবীর উদ্যেশ্যে লাল ফুল নিবেদন করে এবং হাতে চন্দন মালা নিয়ে ১০৮ বার দেবো মন্ত্র জপ করলে, দেবীর আশর্বাদ পাওয়া যায়।