বাংলাহান্ট ডেস্কঃ দোষীকে শাস্তি দেওয়ার জন্য সবাই বিচারের আশায় দ্বারস্ত হন বিচারকের। কিন্তু তার রায়ই যদি ভুল হয় তাহলে মানুষ বিচার পাবার আশায় কোথায় যাবেন? এমনই এক ঘটনা ঘটল। ধর্ষিতা মহিলাকে বিচারকের সুন্দর বলে মনে হয়নি, তারওপর নানান প্রশ্ন করে ধর্ষিতা করা হয়েছিল জর্জরিত। তাকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কেন ওত রাতে অফিসে গিয়েছিলেন?
আপনি মদ্যপান করেছিলেন কেন? কেনই বা আপনি অভিযুক্তদের সকাল পর্যন্ত থাকতে দিয়েছিলেন কেন? একের পর এক বেফাঁস প্রশ্ন। যেন ধর্ষিতারই আসল দোষ। এ তো গেল প্রশ্নের কথা! এক বিচারক (Judge) ধর্ষিতা মহিলার বয়ান বিশ্বাসই করতে চাননি। তার কারণ, সেই মহিলাকে দেখে বিচারকের সুন্দর বলে মনে হয়নি। দেখতে সুন্দর নন। তাই তাঁর ধর্ষণ হতে পারে না!
বিচারকের বেফাঁস প্রশ্নের মুখে ধর্ষিতা। বিচারকের এমন বক্তব্যে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সেই বিচারক সন্দেহ করেছেন, ওই মহিলার সঙ্গে আদৌ দুষ্কর্ম করেনি কেউ। আর এমন মনে করার পিছনে তাঁর এক এবং একমাত্র যুক্তি একটাই। সেই মহিলা তাঁর চোখে ততটা সুন্দর নন। এই ঘটনার পর অনেকেই সেই বিচারকের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিচারকের বিচার পদ্ধতি যদি এমন হয়, তা হলে ভুক্তভোগী বিচারের আশায় কোথায় যাবেন!
কর্নাটক আদালতের বিচারক কৃষ্ণা এক্স দিক্ষীত। তিনি ওই মহিলার অভিযোগ সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, কোনও নারী ধর্ষিতা হলে তার আচরণ এমন হয় না। এমনকী ধর্ষণে অভিযুক্তদের জামিনও মঞ্জুর করেছেন বিচারক কৃষ্ণা। তাঁর একের পর এক বেফাঁস মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তা হলে ধর্ষিতার বয়ান ঠিক কেমন হতে হবে তা নিয়ে কি নির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকবে নাকি! নাকি একজন বিচারক আদর্শ ধর্ষণে মানদণ্ড ঠিক করে দেবেন?
দিল্লির সিনিয়র আইনজীবী অপর্না ভাট এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি দেশের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের তিনজন মহিলা বিচারকের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখেছেন। সেখানে তিনি প্রশ্ন করেছেন, যে ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত নই বা আইনে নির্দিষ্টভাবে লেখা নেই, সেক্ষেত্রে কি বিচার চাওয়ার কোনও পথ নেই? ধর্ষণ মানেই কি নির্দিষ্ট ফরম্যাট মেনে হবে? বিচারক কৃষ্ণা যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করেছেন