বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদিকে যখন করোনায় বিধ্বস্ত গোটা দেশ, রোজই সংক্রমিত হচ্ছেন কয়েক লাখেরও বেশি মানুষ। তখনই গতবছরের আমফানের স্মৃতিকে মনে করিয়ে ফের একবার ভারতবর্ষকে আতঙ্কের দুঃস্বপ্ন ফিরিয়ে দিচ্ছে তাউকটে। আরব সাগরে কয়েকদিন ধরেই রীতিমতো শক্তি বাড়িয়েছে এই ঝঞ্জা। একদিকে যখন করোনায় বিধ্বস্ত সমস্ত পরিষেবা তখন ঘন্টায় ১৬০-৭০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়া এই ঝড় কে সামাল দিতে রীতিমতো নাজেহাল দশা প্রশাসনের। ইতিমধ্যেই কর্ণাটকে প্রভূত ক্ষতি করেছে এই ঝড়। বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে প্রায় ৭৩টি গ্রাম। কয়েকদিন ধরে চলা প্রবল বৃষ্টিতে দিশাহারা মানুষ। মৃত্যুও হয়েছে চারজন নাগরিকের।
অন্যদিকে গতকাল সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ গোয়ায় আছড়ে পড়ে তাউকটে। সকাল থেকেই একনাগাড়ে চলেছে বৃষ্টি এবং বিধ্বংসী ঝড়। জায়গায় জায়গায় ভেঙে পড়েছে গাছ। প্রভূত ক্ষতি হয়েছে উপকূলের কাছাকাছি থাকা বসতি এলাকার। একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কর্নাটকের উপকূলীয় জেলা গুলি।
তেমনি প্রভূত ধ্বংসের সম্মুখীন হয়েছে গোয়ায়। আবহাওয়া দপ্তরের মতে ক্রমশ উত্তর থেকে উত্তর-পশ্চিমের দিকে সরে যাচ্ছে এই ঝঞ্জা। হাওয়া অফিস আরো জানিয়েছে, এখন এই ঝড়ের অবস্থান পূর্ব-মধ্য আরব সাগরের মুম্বাই উপকূলের কাছাকাছি। আজ রাতের মধ্যেই গুজরাট উপকূলে উনার কাছে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় তাউকটের।
এই ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৮৫ কিলোমিটার /ঘন্টা হতে পারে বলেই দাবি করছে বিশেষজ্ঞ মহল। ইতিমধ্যেই মুম্বাইয়ে জারি করা হয়েছে লাল সর্তকতা। গতকালই মুম্বাই থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে করোনা রোগীদের। লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে গুজরাটের বিভিন্ন এলাকাতেও। বিশেষজ্ঞদের মতে আপাতত ঝড়ের অভিমুখ পোরবন্দর তথা মাহবুবার মাঝামাঝি।
সমুদ্র যেভাবে ফুঁসছে গুজরাট উপকূলে তাতে গির ন্যাশনাল পার্কের যথেষ্ট ক্ষতি হবার আশঙ্কা রয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। তবুতো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে জুনাগর আমরেলিতেও। ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী। এই বিষয়ে সর্বদা কড়া নজর রাখবে প্রশাসন এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। যদিও বাংলায় তেমন প্রভাব পড়বেনা ঘূর্ণিঝড় তাউকটের।
অন্তত তেমনটাই মত বিশ্লেষকদের। গতবছর আমফানের সময় কোভিড কালে এধরনের ঝড়কে সামাল দেওয়া কতটা কঠিন তা অক্ষরে অক্ষরে বুঝতে পেরেছে বাংলা। কোথাও কোথাও ইলেক্ট্রিসিটি ছিলো না বহু দিন ব্যাপী। গতবছরের থেকেও এ বছর আরও ভয়ঙ্কর অবস্থায় রয়েছে কোভিড। সে ক্ষেত্রে ইলেকট্রিসিটি বা অন্যান্য বিষয়গুলির অভাব ঘটলে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হবে সংকটজনক পরিস্থিতিতে থাকা রোগীদের। আগামী দিনে কিভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেন কেন্দ্র তথা রাজ্য সরকার সেদিকেই এখন নজর থাকবে সকলের।