‘আমি ইসরাইল, ধর্ষণ করেছি! গুলি করবেন না স্যার” বুলডোজারের ভয়ে আত্মসমর্পণ ধর্ষকের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে বুলডোজারের আতঙ্ক। প্রায় প্রতিদিনই অপরাধীরা নিজে থেকে তাঁদের অপরাধের কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন সে রাজ্যে। এবার উত্তরপ্রদেশের, গোন্ডা জেলায় একটি দলিত মেয়েকে গণধর্ষণের ঘটনায় তৃতীয় অভিযুক্ত ইসরায়েল, তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।

গোন্ডা পুলিশের এসপি সন্তোষ কুমার গত রবিবার এই বিষয়টি সামনে এনেছেন। জানা গিয়েছে যে, গত শনিবার পুলিশ একটি বুলডোজার নিয়ে ইসরায়েলের বাড়িতে পৌঁছেছিল। এমনকি, অভিযুক্ত ইসরায়েলের জন্য ২৫ হাজার টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল পুলিশ। এদিকে, আত্মসমর্পণের সময়ে অভিযুক্তর হাতে থাকা একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, “স্যার, আমি আত্মসমর্পণ করছি। আমাকে গুলি করবেন না।”

   

এই প্রসঙ্গে আত্মসমর্পণের বিশদ বিবরণ দিয়ে, গোন্ডার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, “একটি ধর্ষণের ঘটনায় ২৫,০০০ টাকা পুরস্কারের একজন দুর্বৃত্ত আজ থানা কোতোয়ালি নগরে আত্মসমর্পণ করেছে। অভিযুক্তের নাম ইসরাইল। তাঁর পিতার নাম ইউসুফ। পাশাপাশি, এই ঘটনায় পুলিশের এনকাউন্টারে গুলিবিদ্ধ হয়ে আরও দুই সহযোগীকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

এই মামলার সাথে সম্পর্কিত আগের ঘটনাগুলির বিশদ বিবরণ দিয়ে, গোন্ডার এসপি তথা আইপিএস সন্তোষ কুমার বলেছেন, “চার দিন আগে, দলিত সম্প্রদায়ের এক মহিলা তাঁর মেয়েকে নিয়ে গণশুনানিতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, তাঁর মেয়ের সাথে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। SC/ST আইন সহ প্রাসঙ্গিক আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের টিম গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনার অন্যতম আসামী রাজা, পুলিশ এনকাউন্টারে গুলিবিদ্ধ হয়ে ধরা পড়েন। পুলিশ এনকাউন্টারে গুলিবিদ্ধ হয়ে গভীর রাতে রিজওয়ান নামে এক আসামীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।”

এসপি সন্তোষ কুমার আরও বলেন, “তৃতীয় অভিযুক্ত ইসরাইলও এখন আত্মসমর্পণ করেছে। আমাদের পুলিশের দল শনিবার বুলডোজার নিয়ে বাকি আসামীদের বাড়িতে পৌঁছয়। এসব আসামীদের সাহায্যকারী ও আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। এরপর ইসরাইল পুরো পরিবারসহ আত্মসমর্পণ করেছে। এই মামলার আরেক অভিযুক্তকেও খুঁজছে পুলিশ। আমাদের দল এই চার অভিযুক্তকে বিচারের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চেষ্টায় থাকবো যাতে আদালত কম সময়ের মধ্যেই এদের বড়সড় শাস্তি দিতে পারে।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের দুষ্কৃতীরা যোগী আদিত্যনাথ সরকারের সুপরিচিত “বুলডোজার” পদক্ষেপের ভয়ে আত্মসমর্পণ করছে। এর আগেও বুলডোজারের আতঙ্ক উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড় জেলায় ধর্ষণের অভিযুক্তকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিল।

উল্লেখযোগ্যভাবে, নির্বাচনের পর উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার পুনরায় ক্ষমতায় নির্বাচিত হয়েছে এবং রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করছে। “বুলডোজার ওয়ালে বাবা”-র নামে যোগী আদিত্যনাথ বেশ কয়েকবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন উত্তরপ্রদেশের একাধিক অবৈধ নির্মাণ এবং ভবনগুলি ভেঙে দেওয়ার জেরে। তবে, এবার বুলডোজার আতঙ্ক গ্রাস করেছে বাকি অপরাধীদেরও।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর