বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে একাধিক গ্রামের বিস্তার। যেগুলিতে প্রচলন রয়েছে একাধিক প্রথার (Rituals)। মূলত, বিভিন্ন বিশ্বাসের ওপর ভর করে তৈরি হওয়া এই প্রথাগুলি এখনও বহুল পরিমানে দেখা যায় সংশ্লিষ্ট জনমানসে। এমনকি, আমাদের রাজ্যেও এমন অনেক প্রসঙ্গ আমরা দেখতে পাই। যেগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হল বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া। তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা ভারতেরই একটি গ্রামের এমন একটি আজব রীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরব যা জানার পর অবাক হবেন আপনিও!
মূলত, আমরা কর্ণাটকের কালকেরি (Kalkeri) গ্রামের প্রসঙ্গটি তুলে ধরব। যেখানে, ওই গ্রামের বাসিন্দারা তাঁদের প্রিয়জনদের কবর খোঁড়েন এবং তাঁদের মৃতদেহে জল ঢেলে বৃষ্টির দেবতাকে খুশি করেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, কর্ণাটকের বিস্তীর্ণ অংশে ভারী বর্ষণের কারণে বহু এলাকা ভূমিধস ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কালকেরি গ্রামে এক ফোঁটা বৃষ্টিও হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই, গ্রামবাসীরা এতে চিন্তিত হয়ে পড়েন।
পাশাপাশি, তাঁরা একসাথে বসে এর পেছনের কারণ জানার চেষ্টা করলে সেই আলোচনার সময় মনে করা হয়েছিল যে, ওই গ্রামটি “অভিশপ্ত”। যার সমাধান হিসেবে উঠে আসে প্রিয়জনদের কবর খুঁড়ে মৃতদেহের মুখে জল দেওয়ার প্রসঙ্গ। আশ্চর্যের বিষয় হল, গ্রামবাসীরা এই উপায়টিকেই অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন।
এই প্রসঙ্গে নিউজ ১৮-এর খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, গ্রামবাসীরা একত্র হয়ে গত মাসে মারা যাওয়া সমস্ত ব্যক্তির একটি তালিকা তৈরি করেন। তারপর কবরস্থানে গিয়ে সেই তালিকা অনুযায়ী ওই মৃতদের কবর খুঁজে বের করা হয়। এখানেই শেষ নয়, সেখানে প্রায় দুই ফুট গভীর একটি গর্ত খনন করে জলের পাইপ ঢুকিয়ে তারপর ট্যাঙ্কারের সাহায্যে কবরে জল দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, প্রায় ২৫ টি কবরে এইভাবে জল দেওয়া হয়। সর্বোপরি, কাকতালীয়ভাবে এই অভিনব প্রক্রিয়ার পরে, ওই গ্রামে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। আর স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় গ্রামবাসীরাও স্তম্ভিত হয়েছেন।
কিভাবে শুরু হয় এটি:
জানা গিয়েছে, প্রায় ১,৫০০ জন বাসিন্দার ছোট গ্রাম কালকেরিতে সবসময় খুব কম বৃষ্টি হয়। তবে, এই প্রথার আবির্ভাব ঘটে কিছু বছর আগেই। মূলত, বেশ কয়েক বছর পূর্বে ওই গ্রামে এক বৃদ্ধ মুখ খোলা রাখা অবস্থায় মারা যান। এমতাবস্থায়, তাঁর মুখ বন্ধ না করেই তাঁকে কবর দেওয়া হয়। এদিকে, ওই বছরই গ্রামে প্রচণ্ড খরা ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। যার ফলে গ্রামবাসীদের হতে হয় ক্ষতির সম্মুখীন।
এরপর গ্রামের লোকজন এক জ্যোতিষীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি জানান মৃতদেহ “তৃষ্ণার্ত” থাকার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামবাসীরা কবর খুঁড়ে মৃতদেহে জল দেন এবং পরে সেখানে বৃষ্টি শুরু হয়। যদিও, এই ঘটনার পর যখনই গ্রামে খরার আবহ তৈরি হয় তখনই গ্রামবাসীরা এই আচার পালন করেন।