যান না স্কুলে, ফোরের ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব! ‘গুণধর’ শিক্ষক তবুও মাস গেলে পাচ্ছেন পুরো মাইনে

বাংলাহান্ট ডেস্ক : একদিন বা দুদিন নয়, দীর্ঘ সাত মাস ধরে স্কুলের ত্রিসীমানার মধ্যে দেখা যায় না তাকে। অথচ মাস গেলে পাচ্ছেন মোটা অংকের বেতন। নিশ্চয়ই অবাক হয়ে ভাবছেন এমনটা আবার হয় নাকি? শিক্ষক পরিমল কুমার বাইনের ক্ষেত্রে অন্তত মাসের পর মাস তেমনটাই হচ্ছে। নিয়োগে দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে তখন তোলপাড় শুরু হয়েছে সারা রাজ্যে ঠিক সেই সময়ে নদীয়ার রানাঘাটের চিনাপুকুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।

তবে এখানেই শেষ নয়, ৫৭ বছর বয়সি ওই শিক্ষক আবার চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন বলেও খবর আছে। জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে অন্য স্কুল থেকে বদলি হয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে পরিমল কুমার বাইন যোগ দেন রানাঘাটের চিনাপুকুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। রানাঘাট-১ চক্রের অধীনে থাকা এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে পড়ুয়ার সংখ্যা ৮১। কিন্তু, স্কুলের অন্যান্য সহকারি শিক্ষক ও মিড ডে মিলের রাঁধুনিদের সঙ্গে অভব্য আচরণের জন্য তাকে বদলি করে দেওয়া হয়।

   

সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে সরিষাডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কিছুদিন চাকরি করার পর ফের ২০২১ সালে চিনাপুকুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এরপর ২০২২ সালের জুন মাসে পরিমলবাবুর ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়টি এলাকার মানুষের কানে গেলে তোলপাড় শুরু হয় গোটা গ্রামে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত বাগচি স্কুল ইনস্পেক্টর বা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানাতেই জুলাইয়ের ৯ তারিখ পরিমল কুমার বাইনকে ওই স্কুল থেকে তুলে নেওয়া হয়।

এখন তিনি নিয়মিত হাজিরা দেন রানাঘাট-১ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে। মাসের শেষে বেতনও পাচ্ছেন। যদিও পরিমলবাবু বলেন, “বসে বসে বেতন নেওয়া ঠিক নয়।” পাশাপাশি তার আরোও সংযোজন, “অনেকবার আমি বলেছি ছেড়ে দিন, স্কুলে যাই। যাকে ওই প্রস্তাব দিয়েছিলাম তাদেরও কোনও আপত্তি নেই। ডিআই-কে বলেও কিছু হয়নি। এখন বসে থাকা কাজ।” তবে তিনি যে ওই ছাত্রীর মাকে ফোন করেছিলেন তা স্বীকার করেছেন নিজেই।

China pukuria school

এদিকে, চিনাপুকুরিয়া প্রাথমিক বদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, “উনি ঠিকমত পড়াতে পারেন না এমন নয়। কিন্তু কোন ভরসায় অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাবেন? আবারও এমন ঘটবে না তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। উনি সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ নন।” রানাঘাটের মহকুমা শাসক হারিস রশিদ বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি, খোঁজ নেব। তারপরেই কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা জানিয়ে দেব।’

Avatar
Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর