‘অখণ্ড ভারত” মানচিত্র দেখে আতঙ্কে বাংলাদেশ! মুখ খুলল নয়া দিল্লী

বাংলা হান্ট ডেস্ক : নতুন সংসদ ভবনে অখণ্ড ভারতের মানচিত্র (‘Akhand Bharat’ map) রাখা নিয়ে একাধিক বিতর্ক উঠে আসছে। তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছে পাকিস্তান। উত্তপ্ত বাংলাদেশও (Bangladesh)। ভারত সরকার কূটনৈতিক চ্যানেলে এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেও ভোটমুখী বাংলাদেশে ওই মানচিত্র রীতিমতো নির্বাচনী প্রসঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে। বেকায়দায় পড়েছে শাসক দল আওয়ামী লিগ ও সরকার।

নতুন সংসদ ভবন উদ্ধোধনের দিন দেখা যায় সেখানে অখণ্ড ভারতের একটি মানচিত্র মুর‍্যালে তুলে ধরা হয়েছে। তাতে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটানের আলাদা করে উল্লেখ নেই। তবে বহু এলাকার পুরনো নাম লেখা রয়েছে। যেমন পশ্চিমঙ্গ এবং বর্তমান বাংলাদেশের অংশ সেখানে ‘বঙ্গ’ নামে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই ম্যাপের পাটলিপুত্রই আজকের পাটনা এবং লাগোয়া এলাকা। আছে হস্তিনাপুরের উল্লেখ। ওড়িশা আছে কলিঙ্গ নামে।

নয়া সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত খবর প্রচারিত হওয়ার পর বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে উত্তাল শুরু হয়। সে দেশের বহু মানুষ অভিযোগ করেন, এই মানচিত্রের অর্থ ভারত বাংলাদেশের পৃথক অস্তিত্ব স্বীকারই করে না। পাকিস্তানেও ঝড় ওঠে। আর মাত্র মাস ছয় পরই বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সে দেশ মার্কিন ভিসা নীতি, মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিংয়ের সমস্যায় জেরবার। শুরু হয়েছে ডলার সংকট। সরকারের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ নেই। তার উপর ভারতের সংসদে অখণ্ড ভারতের মানচিত্র পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।

akhanda bharat pakistan

চাপের মুখে গত সোমবার দিল্লির বাংলাদেশ দূতাবাস ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে এই বিষয়ে ব্যাখ্যা তলব করেছিল। জানা যাচ্ছে, কালক্ষেপ না করে নয়া দিল্লি ঢাকার প্রশ্নের জবাব দিয়েছে। তারা বলেছে, এই মানচিত্র সম্রাট অশোকের সময়ের ভারত ভূখণ্ড, যার শরিক উপমহাদেশের সব দেশই। নয়া সংসদ ভবনে সেটি রাখা হয়েছে গণমুখী প্রশাসনের গুরুত্ব তুলে ধরতে যা অশোকের সময়ে অনুসরণ করা হত।

তবে সেই ব্যাখ্যার পরও ভারত বিরোধী প্রচার বন্ধ হয়নি। অখণ্ড ভারতের মানচিত্রের সঙ্গেই আলোচনায় টেনে আনা হচ্ছে বাংলাদেশের সড়ক, নদী, বন্দর ইত্যাদি ভারতকে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে। গতমাসেই চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ভারতকে ব্যবহারের ছাড়পত্র দেয় বাংলাদেশ সরকার। ওই দুই বন্দর দিয়ে ভারত বিদেশে পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি অসম, মণিপুর, ত্রিপুরা-সহ দেশের উত্তর-পূর্ব অংশে মালপত্র আনা নেওয়া করতে পারবে।

এখন প্রশ্ন হল বাংলাদেশ কি ভারতের এই উত্তরে সন্তুষ্ট হবে নাকি পরবর্তীকালে সেদেশের তরফ থেকে আবারও প্রশ্ন উঠতে পারে? এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন দিল্লির কাছে এই মানচিত্র নিয়ে জবাবদিহি চাইলেও এই বিষয়টিকে বড় করে দেখছেন না বাংলাদেশ। এদিকে বলে রাখা দরকার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেনাপ্রধান মনোজ পান্ডের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোকে মনে রাখতে হবে এটা চিন নয় যে অন্যের জমিতে ভাগ বসানোই যাদের একমাত্র লক্ষ্য এটা ভারতবর্ষ৷

Sudipto

সম্পর্কিত খবর