বাংলা হান্ট ডেস্ক : মহুয়া মৈত্রর (Mahua Moitra) বিরুদ্ধ ওঠা ‘ঘুষের বদলে প্রশ্ন’ (Cash For Questioning) অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি (State Politics)। রাজনৈতিক শিবিরের একটা বড় অংশ মনে করছেন, মহুয়ার সাংসদপদ খারিজ হওয়াটা এখন কেবল সময়ের অপেক্ষামাত্র। গত বৃহস্পতিবারও এথিক্স কমিটির মিটিং-এ এক হুলস্থুল কান্ড বাঁধিয়েছেন তিনি। এমতাবস্থায় ছেড়ে কথা বলছেনা বিরোধী শিবিরও। যেমন আজকেই কৃষ্ণনগরের সভায় কড়া ভাষায় মহুয়াকে ধুয়ে দিলেন বিজেপি নেতা (BJP Leader) শঙ্কুদেব পান্ডা (Shankudeb Panda)।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার একপ্রকার যুদ্ধ করেই এথিক্স কমিটির মিটিং ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সেই সাথে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন কমিটির চেয়ারপার্সন বিনোদ সোঙ্কারকে। যদিও বিনোদ সোঙ্কার এই দায় ঝেড়ে ফেলে জানিয়েছেন, তৃণমূল সাংসদকে কেবল সেই সব প্রশ্নই করা হয়েছিল, যা নিয়ে তার উপর অভিযোগ রয়েছে। তবে তিনি সঠিক উত্তর দেওয়ার জায়গায় উল্টে নাকি ঝামেলা সৃষ্টি করেন। এমনকি তিনি এটাও বলেন যে, চেয়ারম্যানের জন্য যে ভাষার প্রয়োগ তিনি করেছেন তা নাকি একজন এমপি-র মুখে মানায়না।
এই ঘটনার রেশ কাটার আগেই মহুয়ার গড় কৃষ্ণনগরের মাটিতে দাঁড়িয়েই সাংসদকে ধুয়ে দিলেন বিরোধী শিবিরের নেতা শঙ্কুদেব পান্ডা। তার দামী ব্যাগ থেকে শুরু করে দামী লিপস্টিক__এই প্রতিটি জিনিসের উল্লেখ ছিল তার কথায়। কৃষ্ণনগরের মানুষের ভরসা ‘অঞ্জনা নদী’র কথাও বললেন তিনি। শঙ্কুদেবের কথায়, ‘অঞ্জনা নদীর কথা যারা বলছেন, যারা আন্দোলন করছেন, তাদের সাথে রাজনৈতিক লড়াই থাকতে পারে। তবে যে এজেন্ডা নিয়ে কথা বলছেন সেটা কৃষ্ণনগরের মানুষের কথা ভেবে। তবে কৃষ্ণনগরের মানুষ তো আর দামী ব্যাগ বা লিপস্টিক উপহার দিতে পারবেনা।’
আরও পড়ুন : জন্মদিনে শাহরুখকে দেখতে যাওয়াই হল কাল! ভক্তদের পকেট থেকে চুরি একের পর এক মোবাইল
এইদিন সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে মহুয়া মৈত্রকে ঠগ, জোচ্চোর বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। শঙ্কুদেব পান্ডার কথায়, তৃণমূল সাংসদ কৃষ্ণনগরের লক্ষ লক্ষ মানুষকে বঞ্চিত করেছেন। সাধারণ মানুষকে ঠকিয়েছেন তিনি। এবং তিনি এটাও জোর গলায় বলেন যে, কৃষ্ণনগরের এতো মানুষকে বঞ্চনা করার ফল তিনি জেলে গিয়েই ভুগবেন। এথিক্স কমিটির মিটিং ছেড়ে বেরিয়ে আসা প্রসঙ্গেও মহুয়াকে চাঁচাছোলা ভাষায় ধুয়ে দিলেন তিনি।
আরও পড়ুন : কূটকচালি নেই তাই TRP নেই, মাত্র ৮ মাসেই শেষ হচ্ছে মানিক কমলার সফর! মুখ খুললেন সুকৃত
তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার উদ্দেশ্যে শঙ্কুদেব পান্ডার প্রশ্ন, ‘ব্যক্তিগত বিষয়ের জন্য আপনি একজন এমপি হিসেবে অফিশিয়াল আইডেনটিটি কোড সেটা আপনি বিদেশের এক ব্যবসায়ীকে দিয়ে দিতে পারেন? দেশের সার্বভৌমত্ব, দেশের সুরক্ষাব্যবস্থা আপনি বেঁচে দিয়েছেন। কিসের বিনিময়ে? একটা দু লাখ টাকার ব্যাগ, একটা চার হাজার টাকার লিপস্টিকের বিনিময়ে? কৃষ্ণনগরের মানুষরা কত কষ্ট করে! টোটো ছাড়া সংসার চালানোর উপায় নেই তাদের। কী দিয়েছে সরকার তাদের?’
আরও পড়ুন : জৌলুসহীন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল, দীপাবলির আগেই বন্ধ হয়ে গেল আরও এক জুট মিল, মাথায় হাত শ্রমিকদের
এরপরেই শঙ্কুদেব মহুয়া মৈত্রর মুখোশ টেনে ধরে বলেন, ‘তিনি এই গরিব মানুষগুলোর হয়ে প্রশ্ন করলে আমি কিছু বলতাম না। কিন্তু তিনি এদের হয়ে কোনও প্রশ্ন করেননি। তিনি প্রশ্ন করেছেন একজন ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির হয়ে। যে বড় বড় জায়গায় ইনভেস্ট করে।’ এইদিন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেও কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন এই বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, ‘পারলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলুক যে, মহুয়া মৈত্র যা করেছে ঠিক করেছে।’ পাশাপাশি তিনি এটাও বলেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা বলবেননা। কারণ তিনি জানেন যে, ‘মহুয়া মৈত্র দেশ বেঁচে দিয়েছে’।