বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি ২০১৪ সালের প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা টেটের (TET) ভিত্তিতে ২০১৬ এবং ২০২০ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল প্রকাশ করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে (West Bengal Board of Primary Education) নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha)। তবে এদিন বিচারপতি সিনহার নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ (Calcutta High Court Division Bench)।
বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ আগামী চার সপ্তাহের জন্য বিচারপতি সিনহার নির্দেশ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। প্রসঙ্গত, এর আগে ৪২০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের প্যানেল প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিনহা। ডিসেম্বরেই জেলা ভিত্তিক নিয়োগের প্যানেল আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন বিচারপতি সিনহার সিঙ্গল বেঞ্চ। তার নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেই মামলারই এদিন শুনানি ছিল।
বুধবার বিচারপতি সেন এবং বিচারপতি কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। যারা মামলাকারী তারা টেট উত্তীর্ণ কি না সেই নিয়ে সিবিআইকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। আগামী ৩ জানুয়ারির মধ্যে এই নিয়ে আদালতে রিপোর্ট দিতে হবে সিবিআইকে। ৪ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।
আগে যা হয়েছিল
২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে দু’টি নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়েছিল। একটি ২০১৬ সালে এবং অন্যটি ২০২০ তে। এই দুই সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল প্রকাশ করার জন্য পর্ষদকে আগেই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তবে গত ১৩ ডিসেম্বর হলফনামা দিয়ে পর্ষদ জানায়, পূর্বে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে একটি প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সালের নিয়োগের বিধি মেনে জনসমক্ষে প্যানেল প্রকাশের নিয়ম নেই।
পর্ষদের কথায় বিরাট ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি সিনহা। এরপরই প্যানেল প্রকাশ করতে না চাওয়ায় পর্ষদকে ধমক দেন তিনি। বলেন, ‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে এক বার প্রকাশ করা হলে দ্বিতীয় বার সেই একই জিনিস প্রকাশে আনতে অসুবিধা কোথায়? আমি প্রাথমিকের প্যানেল দেখতে চাই। মেয়াদ শেষের আগে যে প্যানেল প্রস্তুত হয়। তা আমি দেখতে চাই।’ বিচারপতির মন্তব্য, প্যানেল কারও বাড়িতে গচ্ছিত রাখার সম্পত্তি নয়।
আরও পড়ুন: ‘উনি আমার কথা মন দিয়ে শুনেছেন…’, কোন আশ্বাস দিয়েছেন মোদী? বৈঠক শেষে জানালেন মমতা
১৩ ডিসেম্বর এর আগে এই মামলার শুনানি হয়েছিল গত ৩০ নভেম্বর। সেই শুনানিতেও আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে পর্ষদ। সেই সময় ৯৪ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার কথা জানিয়েছিলেন। ওই ৯৪ জনকে শূন্যপদের বাইরে থেকে নিয়োগ করা হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছিলেন পর্ষদের আইনজীবী। শুধু তাই নয়, যে দু’টি প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছিল তাও সঠিক নয় বলে জানানো হয়েছিল। প্যানেলের জন্য আদালতে ফের সময় চাওয়া হয়েছিল।
সেই সময় উষ্মাপ্রকাশ করে বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, ”আর কত দিন বঞ্চিতেরা অপেক্ষায় থাকবেন! দিন পেরিয়ে যাচ্ছে, তাদের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে।” পর্ষদকে আরও সাত দিন সময় দেন বিচারপতি। আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে পর্ষদকে হলফনামায় দু’টি নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল আদালতে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে তারপরও প্যানেল প্রকাশ্যে আনেনি পর্ষদ। উল্টে বিচারপতি সিনহার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল পর্ষদ।