বাংলাহান্ট ডেস্ক : বছর খানেক আগেও ভারতের (India) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অপমানজনক মন্তব্যের জেরে সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল মালদ্বীপের সঙ্গে। ফলস্বরূপ আপামর ভারতীয়র (India) মালদ্বীপকে (Maldives) পর্যটন স্থল হিসেবে বয়কট এবং দেশের আপন লাক্ষাদ্বীপকে সাদরে গ্রহণ করায় কার্যত পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছিল দ্বীপরাষ্ট্রটির। তড়িঘড়ি রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতিতে জোর দেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। আর এবার মালদ্বীপের (Maldives) স্বাধীনতা দিবসেও ‘প্রধান অতিথি’ হয়ে সে রাষ্ট্রে গিয়েছেন মোদী। এই উপলক্ষে একাধিক বাণিজ্য চুক্তিও সাক্ষর হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
মালদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্কের দৃঢ়তা বাড়াল ভারত (India)
ব্রিটেন সফর সেরেই শুক্রবার মালদ্বীপ পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিমানবন্দরে পা রাখতেই পেয়েছেন উষ্ণ অভ্যর্থনা। মোদীকে জড়িয়ে ধরেন মুইজ্জু। অথচ ২০২৩ সালে মালদ্বীপের (Maldives) ক্ষমতায় এসে এই মুইজ্জুই ‘ইন্ডিয়া আউট’ নীতি গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর চিন প্রীতির কথা আর কারোরই জানতে বাকি নেই। যদিও ভারতের (India) সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাতেই যে আখেরে মালদ্বীপের লাভ, তা কিছুটা দেরিতে হলেও ঠেকে শিখেছেন মুইজ্জু।
কী বললেন প্রধানমন্ত্রী: মালদ্বীপে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে যোগ দিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের দীর্ঘ এবং দৃঢ় সম্পর্কের ইতিহাসের কথা বলেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘ভারত (India) মালদ্বীপের সম্পর্কের শিকড় আমাদের ইতিহাসের মতোই পুরনো। এই সম্পর্ক মহাসাগরের মতোই গভীর। মোদীর এবারের মালদ্বীপ সফর আরও একটি কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এবছরই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৬০ বছর পূরণ হচ্ছে। সেই উপলক্ষে একটি স্ট্যাম্প প্রকাশের পাশাপাশি মালদ্বীপকে (Maldives) ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ ঘোষণাও করেন নমো।
আরও পড়ুন : বেফাঁস মন্তব্যে লাগাতার বিতর্কের কেন্দ্রে, লম্বা বিরতি শেষে TRP টপার মেগায় ফিরলেন নায়িকা
সাক্ষর হয়েছে বাণিজ্য চুক্তি: দুই দেশের মধ্যে এদিন একগুচ্ছ বাণিজ্যিক চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। মালদ্বীপের সেনার সাহায্যে ৭২ টি সামরিক যান দেওয়ার ঘোষণাও করেন তিনি। মোদী বলেন, ভারতের (India) ‘প্রথমে প্রতিবেশী ও মহাসাগর’ দৃষ্টিভঙ্গির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শরিক মালদ্বীপ। নরেন্দ্র মোদীর এই কূটনৈতিক পদক্ষেপ ভারতের এক বিরাট কৌশলগত জয় বলেই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন : ফল প্রকাশই হয়নি প্রেসিডেন্সিতে, মাছি তাড়াচ্ছে যাদবপুর, বেহাল দশা রাজ্যের নামী দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে
স্পষ্ট করে বললে, মালদ্বীপে চিনের বাণিজ্যিক প্রভাব এবং বিনিয়োগ ক্রমেই বাড়ছে। উপরন্তু চিনপন্থী মুইজ্জু এবং তাঁর মন্ত্রিসভার কারণেই ভারত এবং মালদ্বীপের সম্পর্কে একটা চিড় ধরেছিল। যদিও সেই তিক্ততা বর্তমানে আর নেই। ভারতকে ছাড়া যে গতি নেই তা দিব্যি টের পেয়েছেন মুইজ্জু। আর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক তথা কূটনৈতিক সম্পর্কের এই নতুন অধ্যায় যে চিনের মাথাব্যথা আরও বাড়াবে তেমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাবও বজায় রাখতে পারবে ভারত।