ফেরা হল না ঘরে… নেপালে বেড়াতে গিয়ে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে প্রাণ গেল ভারতীয় মহিলার

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: নেপালে (Nepal) চলতে থাকা বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে এক ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। মৃতার নাম রাজেশদেবী গোলা, উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদের বাসিন্দা। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নেপালে চলমান হিংসায় এখনও পর্যন্ত ৫১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন এক ভারতীয় পর্যটকও।

রণক্ষেত্র নেপালের মৃত্যু ভারতীয় মহিলার (Nepal)

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৭ সেপ্টেম্বর স্বামী রামবীর সিংহ গোলার সঙ্গে কাঠমান্ডুতে (Kathmandu) বেড়াতে গিয়েছিলেন রাজেশদেবী। এক সপ্তাহের সফরে তাঁরা কাঠমান্ডুর একটি হোটেলে উঠেছিলেন। পরিকল্পনা ছিল পশুপতিনাথ মন্দির দর্শন-সহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে যাওয়ার। কিন্তু সফরের মাঝেই হঠাৎ তীব্র অশান্তি ছড়ায় নেপাল (Nepal) জুড়ে। বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রপতি ভবন-সহ একাধিক সরকারি দফতরে আগুন লাগায়, ভাঙচুর চালায় বহু হোটেলেও। সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি রাজেশদেবী ও রামবীরের থাকার জায়গাটি।

আরও পড়ুন:-ফের মতবদল ট্রাম্পের! নভেম্বরেই আসছেন ভারতে? মিলল বড় আপডেট

ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যান্য পর্যটকদের বর্ণনা অনুযায়ী, বিক্ষোভকারীদের নেপালের (Nepal) ওই বিলাসবহুল হোটেলে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ফলে আতঙ্কে অতিথিরা প্রাণ বাঁচাতে ছুটতে থাকেন। রাজেশদেবী ও রামবীর ছিলেন হোটেলের চারতলায়। বেরোনোর অন্য কোনও পথ না থাকায় তাঁরা বিছানার চাদর ও শাড়ি জুড়ে দড়ির মতো বানিয়ে বারান্দা দিয়ে নামতে শুরু করেন। প্রথমে নামছিলেন রাজেশদেবী। দোতলা পর্যন্ত নামার পর হাত ফস্কে নীচে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন তিনি। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান রাজেশদেবী। তাঁর স্বামী রামবীরও আহত হন এবং পরে সেনার একটি জিপ এসে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

রাজেশদেবীর পুত্র বিশাল জানিয়েছেন, ৯ সেপ্টেম্বর রাতে স্থানীয় সময় সাড়ে ১১টা নাগাদ নেপালের ওই হোটেলে আগুন লাগে। বাবা-মা ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আচমকা বিক্ষোভকারীরা হোটেলে ঢুকে পড়লে চারদিক থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চারতলায় আটকে পড়েন তাঁরা। সেই আতঙ্কে চাদর ও কাপড় জুড়ে বানানো দড়ি দিয়ে নামার চেষ্টার মধ্যেই ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।

An Indian tourist died in Nepal turmoil

আরও পড়ুন:- ক্যাম্পাসে আদৌ চলে নজরদারি? ‘অনুমতি ছিল না…’, ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনায় বিষ্ফোরক স্বীকারোক্তি সহ উপাচার্যের

এই ঘটনার পর গাজ়িয়াবাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৃতার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌরভ ভট্ট জানিয়েছেন, দম্পতির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। রাজেশদেবীর মরদেহ যত শীঘ্র সম্ভব নেপাল (Nepal) থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সমস্তরকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

নেপালের (Nepal) হিংসার ঘটনায় এই প্রথম কোনও ভারতীয় পর্যটকের মৃত্যুর খবর মিলল। এতে নেপালে আটকে পড়া অন্যান্য ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।