বাংলাহান্ট ডেস্ক: মঙ্গলবার ভোর থেকেই রাঁচিতে উত্তেজনা ছড়ায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট নরেশকুমার কেজরিওয়ালের বাড়িতে ইডির (Enforcement Directorate) তল্লাশি অভিযান ঘিরে। অভিযোগের ভিত্তিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট একযোগে রাঁচি, মুম্বই ও সুরাটের তাঁর একাধিক ঠিকানায় অভিযান চালায়। তদন্তকারীদের দাবি, প্রাথমিক তল্লাশিতেই কেজরিওয়ালের আয়বহির্ভূত বিপুল সম্পত্তির হদিশ মেলে। দেশের তিন রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা বাড়ি–জমি–ব্যবসা মিলিয়ে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পেয়ে চোখ কপালে ওঠে তদন্তকারীদের। উদ্ধার হয়েছে নথি, ডিজিটাল ডেটা, এবং আর্থিক লেনদেনের এমন সব তথ্য, যা কেজরিওয়ালকে আরও বড় বিপদের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
রাঁচিতে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের একাধিক ঠিকানায় ইডির (Enforcement Directorate) তল্লাশি:
ইডি (Enforcement Directorate) জানায়, নরেশ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হাওয়ালা চক্রের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করতেন। তাঁর নামে-বেনামে পরিবারের বহু সদস্যের মাধ্যমে সম্পত্তি জমিয়ে রাখা হয়েছিল বলে সন্দেহ। আর্থিক তছরুপ, বেআইনি লেনদেন এবং বিদেশি মুদ্রা পাচারের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। প্রথমে আয়কর দপ্তর তদন্ত শুরু করলেও পরে সেই মামলার দায়িত্ব ইডির হাতে আসে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ইডি বিস্তারিত নজরদারি চালায় এবং যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করার পরই এই বৃহৎ অভিযান শুরু করা হয়।
আরও পড়ুন: তৈরি হবে নয়া সঙ্কট? ১০ বছরে ৩০ লক্ষ চাকরি ‘খেতে পারে’ AI, রিপোর্টে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য
তদন্তে উঠে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, নাইজেরিয়া ও আমেরিকায় বেনামে বহু সম্পত্তি রয়েছে কেজরিওয়ালের। কোন দেশে কত সম্পত্তি, তার প্রকৃত মূল্য কত—সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন লেনদেনের হিসেবখাতা থেকে পাওয়া গেছে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ। তদন্তকারীদের অনুমান, এই লেনদেনের একটি বড় অংশই হাওয়ালা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে এবং বিদেশি অ্যাকাউন্টে টাকা সরানোর জন্য জটিল রুট ব্যবহার করা হয়েছিল (Enforcement Directorate)।
দেশের অভ্যন্তরে থাকা সম্পদের মূল্য, বিদেশে বিনিয়োগ এবং ওই সম্পদের উৎস এখন তদন্তের মূল লক্ষ্য। কীভাবে একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এত বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেন, তাঁর আয়ের সঙ্গে এই সম্পদের কি কোনও মিল পাওয়া যায়—সেসব বিষয় খতিয়ে দেখতে বহু নথি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ডিজিটাল রেকর্ড জব্দ করেছে ইডি। তদন্তকারীদের মতে, কেজরিওয়াল যে দীর্ঘদিন ধরে অর্থপাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তার একাধিক প্রাথমিক প্রমাণ ইতিমধ্যেই তাঁদের হাতে এসেছে (Enforcement Directorate)।

আরও পড়ুন:অনুপ্রবেশ রুখতে চরম সতর্ক BSF! এক বছরেই পাকড়াও এত হাজার বাংলাদেশি, জানলে হবেন ‘থ’
এদিকে, অভিযুক্ত নরেশকুমার কেজরিওয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদে হেফাজতে নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইডি। তাঁকে মুখোমুখি জেরা করে সম্পত্তির সঠিক উৎস, বিদেশি নেটওয়ার্ক, এবং সহযোগীদের নাম জানতে চায় তদন্তকারীরা। ইডি (Enforcement Directorate)–র একাধিক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই মামলায় আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে পারে এবং ভবিষ্যতে আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিপুল সম্পত্তি ও লেনদেনের জালে অভিযুক্তের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করছে ইডি, তবে সম্পূর্ণ চিত্র বোঝার জন্য তাঁকে জেরা করাই এখন মুখ্য লক্ষ্য।












