বাংলাহান্ট ডেস্ক: থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার (Thailand-Cambodia) মধ্যে বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলে সম্প্রতি একটি বিষ্ণুমূর্তি ভেঙে ফেলা হয়েছে। বুলডোজার ব্যবহার করে মূর্তিটি ধ্বংস করার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনাটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিতর্কিত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই থাই সেনাবাহিনী মূর্তিটি ধ্বংস করে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার (Thailand-Cambodia) সংঘর্ষে ধুলিস্যাৎ বিষ্ণুমূর্তি, সরব ভারত:
এ ঘটনায় ভারত সরকার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। শুক্রবার ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতাদের গভীরভাবে শ্রদ্ধা ও পূজা করা হয়। এটি পারস্পরিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ।” তিনি এই ঘটনাকে ‘অনভিপ্রেত ও দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে বলেন যে এই ধরনের কাজ শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুভূতিতেই আঘাত করে না, বরং বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ও আহত করে এবং সামাজিক সম্প্রীতি ও সাংস্কৃতিক বন্ধনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
আরও পড়ুন:চাপের মুখে বিশ্ব অর্থনীতি, অথচ হু হু করে এগিয়ে চলেছে ভারত! আম-আদমির জন্য মিলল বড় সুখবর
জয়সওয়াল উভয় পক্ষের কাছে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “জীবনহানি, সম্পত্তির ক্ষতি এবং বিশেষ করে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ক্ষতি রোধ করতে হবে।” তার বক্তব্যে তিনি জোর দিয়ে বলেন, হিংসার পথ ছেড়ে সংলাপের মাধ্যমেই সমাধান খুঁজে বের করা উচিত, কারণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্মান সকল সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি রক্ষা না করলে স্থায়ী শান্তি অর্জন কঠিন।
অন্যদিকে, থাই সেনাবাহিনী তাদের পদক্ষেপকে ন্যায্য বলে দাবি করে একটি বিবৃতি জারি করেছে। তারা দাবি করে যে, ইচ্ছাকৃতভাবে বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় মূর্তিটি নির্মাণ করেছিল কম্বোডিয়া। থাই সেনাবাহিনীর বক্তব্য অনুসারে, মূর্তিটি এমন এক জায়গায় স্থাপন করা হয়েছিল যা দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সীমান্ত বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু। এই অঞ্চলটি পূর্ব থাইল্যান্ডের সিসাকেট প্রদেশ এবং পশ্চিম কম্বোডিয়ার উদোর মেঞ্চে প্রদেশের মাঝে অবস্থিত, যা ঐতিহাসিকভাবে সংবেদনশীল।

আরও পড়ুন: বছর শেষে সোনার দামে বড় চমক! বড়দিনে বাজারে ২২ ও ২৪ ক্যারেট হলুদ ধাতুর দর কত?
এই ঘটনা আঞ্চলিক কূটনীতিতে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, সীমান্ত বিরোধের সমাধানে হিংসাত্মক পদ্ধতি বা সাংস্কৃতিক সম্পদের ধ্বংস কোনো স্থায়ী উপায় নয়। ভারতের প্রতিবাদ এটাই ইঙ্গিত করে যে এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককেই নয়, বৃহত্তর আঞ্চলিক সম্প্রীতিকেও প্রভাবিত করতে পারে। দুই প্রতিবেশী দেশকে সংলাপে ফিরে আসার উপর এখন জোর দেওয়া হচ্ছে।












