বাংলা হান্ট ডেস্ক: জীবনের সফল হতে কে না চান! তবে, সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সফলতা হাসিলের লড়াইটি হয় অত্যন্ত কঠিন। আর যাঁরা এই কঠিন লড়াইতে সাহসের সাথে মুখোমুখি হয়ে জয় অর্জন করেন তাঁরাই হাসিল করেন সফলতা। শুধু তাই নয়, তাঁদের এই উত্তরণের কাহিনি (Success Story) উদ্বুদ্ধ করে বাকিদেরকেও। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা ঠিক সেইরকমই এক লড়াকু ব্যক্তির প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। যিনি একটা সময়ে চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে থাকলেও বর্তমানে কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন।
চমকে দেবে রমেশের সফলতার কাহিনি (Success Story):
মূলত, আজ আমরা আপনাদের গুজরাটের একটি প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা রমেশ রুপারেলিয়ার বিষয়ে জানাবো। একদম ছোট থেকেই চরম আর্থিক অনটনের মধ্যে থাকা রমেশ সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পেরেছিলেন। তারপরে তিনি তাঁর বাবার পরামর্শ অনুযায়ী গোশালা খোলার চেষ্টা করেন। যদিও, এর ফলে তাঁর পরিবার বড় অঙ্কের ঋণের সম্মুখীন হয়। এদিকে, ২০০৫ সালে তিনি গোন্ডল শহরে চলে আসেন এবং কৃষিকাজ শুরু করেন। সেই সময়ে তিনি গরু চরানোর কাজ করে প্রতি মাসে মাত্র ৮০ টাকা আয় করতেন। তবে, আজ রমেশ একটি ডেয়ারি বিজনেস চালান। যেখানে তিনি সফল (Success Story) হয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রতি বছর তিনি কোটি কোটি টাকা আয় করেন।
এভাবে শুরু করেন ব্যবসা: জানিয়ে রাখি যে, রমেশ রুপারেলিয়া গুজরাটের গোন্ডালের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই তিনি গান-বাজনার প্রতি অনুরাগী ছিলেন। পাশাপাশি, তিনি গরু খুব ভালোবাসতেন। রমেশের জীবনে একটি বড় মোড় আসে যখন তিনি পেঁয়াজ চাষ করে ৩৫ লক্ষ টাকা আয় করেন। এই সাফল্য রমেশকে গরুর প্রতি তাঁর ভালোবাসা প্রকাশের সুযোগ করে দেয়। তিনি পথচলতি গরুর দেখাশোনা শুরু করেন। পাশাপাশি, গরু কিনে তিনি শুরু করে ফেলেন দুধের ব্যবসা। বর্তমানে রমেশ “শ্রী গির গৌ কৃষি জাতি সংস্থা” নামে নিজস্ব গোশালা চালান। গির গরুর দুধ থেকে তৈরি অর্গানিক ঘি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আয় করছেন রমেশ।
নিজের জমি ছিল না: রমেশের কাছে তাঁর নিজের কোনও জমি ছিল না। তিনি গোন্ডলে একটি জৈন পরিবারের কাছ থেকে জমি ভাড়া নিয়েছিলেন। আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল রমেশ কৃষিকাজে কোনও রাসায়নিক ব্যবহার করেননি। তিনি বহুদূর থেকে গোবর ও গোমূত্র এনে মাঠে ফেলতেন। আর এইভাবেই তিনি তৈরি করে ফেলতেন জৈব সার।
আরও পড়ুন: টিম ইন্ডিয়াতে আর চান্স পাবেন না ভারতের এই ২ তারকা খেলোয়াড়! শীঘ্রই নিতে পারেন অবসর
সাইকেলে ঘি বিক্রি করতেন: প্রথমে রমেশ দুধ বিক্রি করতেন। কিন্তু, তারপরে তিনি দুধের ব্যবসা বন্ধ করে তার বদলে ভাড়ার ছোট ঘরে ঘি তৈরি শুরু করেন। এর পাশাপাশি তিনি তাঁর সাইকেলে প্লাস্টিক ও কাঁচের জারে ঘি বিক্রি করতেন। যেটি গ্রাহকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করে। আর তারপরেই ঘি উৎপাদনে রমেশ যথেষ্ট মনোযোগ দেন। তিনি গরুকে সঠিকভাবে খাওয়ানোর পাশাপাশি উৎকৃষ্ট মানের ঘি তৈরি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও জানার চেষ্টা করেন।
১২৩ টি দেশে ঘি রপ্তানি হয়: জানিয়ে রাখি, রমেশ গির প্রজাতির গরুর দুধ থেকে ঘি তৈরি করেন। যা খুবই জনপ্রিয় হয়েছে। এইভাবেই ক্রমশ তাঁর ব্যবসা বৃদ্ধি পায় এবং তিনি এখন বিশ্বের ১২৩ টি দেশে ঘি রপ্তানি করেন। কয়েকটি গরু দিয়ে ব্যবসা শুরু করে এখন তাঁর কাছে ২৫০ টি গির গরু রয়েছে। এমতাবস্থায়, রমেশ বছরে প্রায় ৮ কোটি টাকা আয় করেন বলে জানা গিয়েছে। আর এইভাবেই রমেশ প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যে লক্ষ্য স্থির করে সঠিকভাবে পরিশ্রম করে গেলে সফলতা (Success Story) ঠিক পাওয়া যায়।