বাংলাহান্ট ডেস্ক : দুর্গা দর্শনে (Durgapuja) গিয়ে আমাদের সবার চোখ আটকে যায় প্রতিমার সাজে। দেবী দুর্গা হোক কিংবা লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী, দেবতাদের পরনের পোশাক আমাদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সাধারণ বারোয়ারি বা বাড়ির পুজোয় প্রতিমাকে চিরাচরিত ঢঙে শাড়ি পরানো হয়ে থাকে।
ব্যতিক্রমী দুর্গাপুজো (Durgapuja)
তবে এর ব্যতিক্রম আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) কালচিনি ব্লকের দক্ষিণ সাতালির প্রত্যন্ত বোড়ো গ্রামের পুজো। এই পুজোয় দেবী দুর্গা সহ অন্যান্য মূর্তিকে সাজিয়ে তোলা হয় ট্র্যাডিশনাল বোড়ো পোশাক ‘দোখোনা’য়। ধুতির বদলে কার্তিক-গণেশ ও অসুর পরেন বোড়ো গামছা। মাতৃতান্ত্রিক বোড়ো সমাজের পুজোর আয়োজনে থাকেন মহিলারাই।
আরোও পড়ুন : টাকার চিন্তা ভুলে যান! এবার এই নতুন উপায়ে আয় হবে শিল্পীদের, এক ক্লিকেই দেখে নিন বিস্তারিত
বছরের পর বছর ধরে এই পুজোয় (Durgapuja) মা দুর্গা ও লক্ষী-সরস্বতীকে পরানো হয় ‘দোখোনা’। লুঙ্গির কায়দায় বোড়ো গামছা পরানো হয় গণেশ-কার্তিক ও অসুরকে। এছাড়াও এই গ্রামে রয়েছে আরো একটি চোখে পড়ার মতো নিয়ম। প্রতিমা শিল্পী নয়, গ্রামের মহিলারা নিজেদের হাতে দেবীদের পরিয়ে থাকেন ‘দোখোনা’।
গ্রামের পুরুষরা মিলে বোড়ো গামছা পরান পুরুষ দেবতাদের। বছরের পর বছর ধরে বোড়ো সমাজের এই পুজো (Durgapuja) অত্যন্ত নিয়ম-নিষ্ঠার সাথে পালিত হয়ে আসছে। তবে সময়ের জাঁতাকলে আধুনিকতার ছোঁয়াও লেগেছে। তা সত্ত্বেও গ্রামবাসীরা সাবেকি এই প্রথা এখনো বয়ে নিয়ে চলেছেন। গত প্রায় ৫৫ বছর ধরে এই প্রত্যন্ত গ্রামের পুজোয় বলবৎ রয়েছে এই নিয়ম।
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, প্রথমদিকে এই গ্রামেই তৈরি করা হত দেব-দেবীদের দোখোনা। তবে শেষ ২০ বছর ধরে আসাম থেকে নিয়ে আসা হয় দোখোনা আর বোড়ো গামছা। বর্তমানে উত্তরবঙ্গ থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে বোড়োদের ট্র্যাডিশনাল তাঁতের মাকু। তাই আলিপুরদুয়ারে আর দোখোনা তৈরি করা সম্ভব হয় না। ফলে এখন আসাম থেকেই নিয়ে আসা হয় দেব-দেবীদের পোশাক।