বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কিছুদিন আগেই শান্তিপুরে লক্ষী ভান্ডারের নাম করে বিধবা ভাতার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে। সরকারি প্রকল্পে (Government Scheme) এই অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই তদন্ত শুরু করে প্রশাসন। সেই ঘটনার তদন্তে নেমেই এবার ‘কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে এলো কেউটে’! জানা আছে শান্তিপুরের ওই গৃহবধূ একা নন ওই এলাকায় ভুয়ো ভাতা প্রাপকদের সংখ্যা অন্তত ৮২।
লক্ষ্মীর ভান্ডারের নামে বিধবা ভাতা! (Government Scheme)
জানা যাচ্ছে, সরকারি প্রকল্পে (Government Scheme) অধিকাংশ কারচুপি ঘটেছিল করোনাকালে অতিমারির সময়। অভিযুক্তদের কাছ থেকে আসল নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। পাশাপাশি দোষী প্রমাণিত হলে তাদের প্রত্যেকের কড়া শাস্তি হবে বলেও জানিয়েছে প্রশাসন। কিছুদিন আগেই অভিযোগ উঠেছিল শান্তিপুরের শেফালী দে নামে গৃহবধূ দীর্ঘ ২ বছরের বেশি সময় ধরে লক্ষী ভান্ডারের বদলে বিধবা ভাতা পাচ্ছেন। স্বামী বেঁচে থাকা সত্ত্বেও তিনি এই টাকা পাচ্ছিলেন।
অভিযোগ ওঠে এক স্থানীয় তৃণমূল নেতা ৩০০০ টাকার বিনিময়ে তাকে ওই ভাতা পাইয়ে দিয়েছিলেন। এই ঘটনার তদন্তে নেমে নামে প্রশাসন। তারপর উঠে আসে আরও বড় কারচুপির ঘটনা। যা সামনে আসতেই স্তম্ভিত হয়ে যায় শান্তিপুর ব্লক প্রশাসন। সূত্রের খবর ভাতা দুর্নীতির এই অভিযোগের তদন্ত নেমে আরও ৮২ জন ভুয়ো ভাতা প্রাপকের নাম পাওয়া গিয়েছে। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আসল নথি চেয়ে পাঠানোর পাশাপাশি, দোষী প্রমাণিত হলে তাদের কড়া শাস্তি হবে বলেও জানিয়েছে প্রশাসন।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর গোটা শান্তিপুর ব্লকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে (Government Scheme) মোট ৩২ হাজার ভাতা প্রাপক রয়েছে। সেই সমস্ত প্রাপকদের প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা দেখার পর বিরাট অনিয়মের হদিস মিলেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন মোট ৮২ জন ভুয়ো ভাতা প্রাপক। কারও ক্ষেত্রে দেখা গেছে বিধবা না হয়েও নিচ্ছেন বিধবা ভাতা, কেউ আবার প্রতিবন্ধী না নিয়ে হয়েও সমাজকল্যাণ দপ্তরের মানবিক ভাতা পাচ্ছেন, আবার কেউ বা ৬০ বছর বয়স হওয়ার আগেই পেয়ে যাচ্ছেন বার্ধক্য ভাতা। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভুয়ো শংসাপত্র জোগাড় করে ভাতার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: বাংলার গন্ডি পেরিয়ে কেরলেও ফুটল জোড়াফুল! নতুন বছরে ‘সুখবর’ তৃণমূলে
অভিযোগ ভাতা পাওয়ার জন্য কেউ কেউ জাল আধার কার্ড নম্বর ব্যবহার করেছেন। আর এই অনিয়ম বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অতিমারীর সময় ঘটেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। সরকারের তরফে তখন থার্ড পার্টির সাহায্যে ওই প্রকল্পগুলি কাজ করানো হয়েছিল। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান থার্ড পার্টি দিয়ে কাজ করানোর কারণেই ওই সময় বেশি দুর্নীতি হয়েছে।
শান্তিপুর ব্লকে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপকের সংখ্যা ৭ হাজার। প্রশাসনের অন্দরে এই বিষয়েও সন্দেহ রয়েছে। শান্তিপুরের বিডিও জানিয়েছেন তাঁরা এমন অনেক অভিযোগ খুঁজে পেয়েছেন যেখানে যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অনেকে ভাতা নিচ্ছেন। প্রায় সবকটি আবেদনই জমা পড়েছিল অতিমারীর সময়। এ বিষয়ে রানাঘাটের মহাকুমা শাসক জানিয়েছেন এই সমস্ত ভুয়ো প্রাপকদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।