পাল্টে যাচ্ছে নিয়ম? মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর আগেই বড় পদক্ষেপ নিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ!

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হাতে আর মাত্র কটা দিন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে চলতি বছরের মাধ্যমিক (Madhyamik) পরীক্ষা। যা শেষ হবে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি। বিগত কয়েক বছরে একাধিকবার ফাঁস হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। যার জেরে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা বজায় রাখতে এবং গোটা পরীক্ষা ব্যবস্থা সুষ্ঠভাবে পরিচাললনা করার জন্য এবার ব্যাপক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সাধারণত প্রত্যেক বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করে না পুলিশ। তবে এবছর থেকে এই নিয়মে আসছে বিরাট বদল।

মাধ্যমিক (Madhyamik) পরীক্ষা নিয়ে বড় পদক্ষেপ নিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ

বিশেষ প্রয়োজনে কোনো পরীক্ষার্থীদের অভিভাবক যদি পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকেন তাহলে এবার থেকে সেই অভিভাবকের দেহ তল্লাশি করবে পুলিশ।  মঙ্গলবার এই কথা জানিয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। পর্ষদ সভাপতি এদিন জানিয়েছেন, ‘সাধারণত কোন পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকদের পরীক্ষা (Madhyamik) কেন্দ্রে ঢোকার নিয়ম নেই। শুধুমাত্র বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে অভিভাবকের ঢুকতে দেওয়া হয়।’ কিন্তু তিনি জানিয়েছেন অতীতে বিশেষ প্রয়োজনের কথা বলে অভিভাবকরা ভিতরে ঢুকে পরীক্ষার্থীদের হাতে টুকলির কাগজ কিংবা মোবাইল ফোন তুলে দিয়ে এসেছেন। কয়েকটি ক্ষেত্রে ধরা পড়েছেন তাঁরা। সেই কারণেই এবার থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কোন অভিভাবক যদি পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেন তাহলে ঢোকা ও বেরোনোর সময় পুলিশ তার দেহ তল্লাশি করবেন।

পর্ষদের একজন কর্তা জানিয়েছেন অতীতে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যা রীতিমতো আঁটঘাঁট বেঁধে, পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। এরপর উদাহরণ দিয়ে গত বছরের একটি ঘটনার কথা বলা হয়েছে। সেখানে দেখা যায় পরীক্ষা (Madhyamik) চলাকালীন এক পরীক্ষার্থীর শিশুসন্তান কাঁদছে। তাকে তার মা না খাওয়ালে কান্না থামবে না, এই অজুহাতে ওই পরীক্ষার্থীর কাছে শিশুটিকে নিয়ে গিয়েছিলেন এক মহিলা। তিনি নিজেকে পরীক্ষার্থীর আত্মীয় বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। শিশু সন্তান কাঁদছে বলে মানবিকতার খাতিরে ওই মহিলাকে ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। পরে জানা যায় শিশুকে খাওয়ানোর নাম করে ভিতরে গিয়ে পরীক্ষার্থীকে টুকলির কাগজ দিয়ে এসেছিলেন ওই মহিলা। ধরা পড়ার পরে জানা যায় আসলে ওই পরীক্ষার্থীর কোন সন্তানই নেই। পুরোটাই পরিকল্পনা করে করা হয়েছিল।

রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় আরও জানান, শুধু এই ঘটনাই নয়,মাধ্যমিক (Madhyamik) পরীক্ষা চলাকালীন নানা অজুহাতে অভিভাবকদের পরীক্ষার হলের ভিতরে ঢোকার ঘটনা আগেও ঘটেছে বহুবার। অনেক সময় বলা হয় কোনো পরীক্ষার্থী সঙ্গে জরুরী ওষুধ নিতে ভুলে গিয়েছেন,তাকে ওষুধ দিয়ে আসতে হবে। এমন অজুহাতে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকে পরীক্ষার্থীর পরিচিত কেউ একজন তাকে মোবাইল দিয়ে এসেছিল। পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছেন, ‘১০ লক্ষের মতো পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। এত সংখ্যক পরীক্ষার্থীর দেহ তল্লাশি করা পুলিশের পক্ষে খুবই কঠিন। তাই শিক্ষকরাই পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করবেন। তবে প্রাপ্তবয়স্ক কেউ পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তার দেহ তল্লাশি করবে পুলিশ।’

আরও পড়ুন: রাতারাতি হাওয়া বদল! এক ধাক্কায় বাড়ল ৩ ডিগ্রি, বৃষ্টি হবে কোন জেলায়?

মাধ্যমিক (Madhyamik) পরীক্ষা চলাকালীন এবার থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে কোনও সিভিক ভলান্টিয়ার থাকতে পারবেন না। এবছর সিভিকদের জন্য পর্ষদের তরফে এই নতুন নির্দেশ জারি করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে এ বিষয়ে পুলিশকর্তাদের সঙ্গেও তাদের কথা হয়েছে। তাই এবার থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সাধারণ পুলিশের সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়াররা থাকলেও পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতর তাদের দেখা যাবে না। কিন্তু কেন? জানা যাচ্ছে এর পিছনে রয়েছে বিশেষ কারণ।

Madhyamik exam centre new decision by WBBSE

পর্ষদ সভাপতির কথায়, ‘সাধারণত অধিকাংশ সিভিক ভলান্টিয়াররাই এলাকার বাসিন্দা হন। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রও তাদের বাড়ির আশেপাশের এলাকার মধ্যেই হয়। তাই পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের পরিচিত কোন পরীক্ষার্থী থাকতেই পারে। পরীক্ষার (Madhyamik) সময় ওই পরীক্ষার্থী যাতে কোনরকম বাড়তি সুবিধা বা বা টুকলির সুযোগ না পায় তা নিশ্চিত করতেই এবার থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারদের আর পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতর রাখা যাবে না।’

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর