সর্বনাশ! ভারতের সঙ্কট তৈরি করে খেলা ঘুরিয়ে দিল চিন, সামনে বড়সড় বিপদের আশঙ্কা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর বিষয় সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের (Foreign Portfolio Investment, FPI) আকৃষ্ট করার প্রতিযোগিতায় ভারতকে (India) টক্কর দিয়েছে চিন (China)। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এখনও পর্যন্ত, FPI ভারতীয় শেয়ারগুলিতে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা বিক্রি করেছে৷ যেটির রেশ অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে ভারত থেকে বিনিয়োগ বেরিয়ে গিয়েছে। অপরদিকে, চিনে বিদেশি বিনিয়োগ ক্রমশ বাড়ছে। এদিকে, রুপির পতন থেকে শুরু করে আমেরিকান বন্ডে ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ থেকে লাভ ও ভারতীয় (India) কোম্পানির দুর্বল ফলাফলকে এর কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। এমতাবস্থায়, যদি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিক্রি অব্যাহত থাকে সেক্ষেত্রে শেয়ার বাজারের প্রত্যাবর্তন আরও কঠিন হয়ে পড়বে। যার ফলে প্রত্যক্ষভাবে বিনিয়োগকারীদের লোকসান আরও বাড়বে।

বড়সড় সঙ্কটের মুখে ভারতের (India) শেয়ার বাজার:

এই পরিসংখ্যান অত্যন্ত ভয়ের: বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা (FPI) ক্রমাগত ভারতীয় শেয়ার মার্কেট থেকে তাদের টাকা তুলে নিচ্ছে। যার ফলে উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা। বিশেষ করে “ডেডিকেটেড ফান্ড₹ ভারতীয় শেয়ার বিক্রি করছে। অন্যদিকে চিনে বিদেশি বিনিয়োগ আসতে শুরু করেছে।ইলারা সিকিউরিটিজের মতে, এই নিয়ে ৫ মাস ধরে ভারত থেকে বিনিয়োগ বেরিয়ে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে প্রায় ৪০৫ মিলিয়ন ডলার প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এর মধ্যে ২৩৮ মিলিয়ন ডলার “ডেডিকেটেড ফান্ড” থেকে তোলা হয়েছে। এদিকে, আমেরিকান ফান্ড থেকে ভারতে (India) বিনিয়োগের প্রবাহ ২০২৪ সালের অক্টোবরের পরে প্রথমবারের মতো বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে, অন্যান্য দেশ থেকেও বিনিয়োগ তুলে নেওয়া হচ্ছে। আয়ারল্যান্ড থেকে ১০৩ মিলিয়ন ডলার, লুক্সেমবার্গ থেকে ৮৮ মিলিয়ন ডলার এবং জাপান থেকে ৪৬ মিলিয়ন ডলার প্রত্যাহার করা হয়েছে।

China turned the game by creating a crisis for India.

ইলারার মতে, “ইউকে ফান্ডও ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করা হচ্ছে। যার মোট উত্তোলনের পরিমাণ ৪৩৫ মিলিয়ন ডলার। আমেরিকা থেকে ভারতে (India) বিনিয়োগ বেশিরভাগই ETF-এর মাধ্যমে হয়। কিন্তু, অন্যান্য সেক্টর থেকে আসা বিনিয়োগগুলি বেশিরভাগ অ্যাক্টিভ ফান্ডে থাকে। অন্যান্য সেক্টর থেকে বিনিয়োগ তুলে নেওয়া শেয়ারে বড় ধরণের পতন পরিলক্ষিত হচ্ছে।”

চিন ট্র্যাকে ফিরে আসছে: অন্যদিকে, গত ২ সপ্তাহে চিনে বিদেশি বিনিয়োগ ক্রমাগত বাড়ছে। গত সপ্তাহে, সেখানে ৫৭৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে। যা ২০২৪ সালের অক্টোবরের পরে সর্বোচ্চ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ব্রোকারেজ ফার্ম বলছে, গ্লোবাল ফান্ড ম্যানেজাররা ভারতের (India) পরিবর্তে চিনে বিনিয়োগ শুরু করেছে। এদিকে, ভারতে বিদেশে বিনিয়োগকারীদের বিক্রির পরিমাণ এমন একটা সময় ঘটছে যখন ডলারের বিপরীতে ক্রমাগত রুপির পতন পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত শুক্রবার, প্রতি ডলার পিছু রুপির হার ছিল ৮৬.৮৫ টাকা।

আরও পড়ুন: চান্স পাবেন না ৩ তারকা খেলোয়াড়? চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কেমন হবে ভারতের প্লেয়িং ইলেভেন?

সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা: জিওজিৎ ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের প্রধান বিনিয়োগ উপদেষ্টা ভি কে বিজয়কুমার বলেন, “যতদিন FPI বিক্রি অব্যাহত থাকবে ততদিন দেশীয় বাজারে বৃদ্ধির আশা কম। শুধুমাত্র ডলারের পতন এবং মার্কিন বন্ডের পারফরম্যান্স FPI-এর ক্রেতা তৈরি করতে পারে।”

NSDL-এর তথ্য অনুসারে, FPI জানুয়ারিতে ৭৮,০২৭ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করার পর ফেব্রুয়ারিতে ১৯,০৭৬ কোটি টাকার শেয়ার (প্রাথমিক এবং সেকেন্ডারি মার্কেট) বিক্রি করেছে। ২০২৪ সালের ক্যালেন্ডার বছরে, তারা মাত্র ৪২৭ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছিল।

আরও পড়ুন: চিনের অদ্ভুত কারনামা! সমুদ্রের ২,০০০ মিটার নিচে তৈরি হচ্ছে “স্পেস স্টেশন”, কি প্ল্যান জিনপিংয়ের?

এদিকে, মেহতা ইক্যুইটিজের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (গবেষণা) প্রশান্ত তাপসে বলেন, “যেহেতু FPI তাদের বিক্রি অব্যাহত রেখেছে, তাই ভারতীয় (India) শেয়ার বাজারের অস্থিরতা বাড়ছে। বিনিয়োগকারীরা কিছু বড় শেয়ারে মুনাফা বুকিং করছে।”
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের বিষয়টি অত্যন্ত ঝুঁকির। তাই, সেখানে বিনিয়োগের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করুন।)

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর