বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে ভারত এবং বাংলাদেশের (India-Bangladesh) মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা হলেও প্রভাবিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের একের পর এক পদক্ষেপকে ঘিরে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়ও। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিকরা ভারতে চিকিৎসার জন্য আসতেন। তবে, এখন তাঁদের চিকিৎসার নতুন গন্তব্য হতে পারে চিন। ইতিমধ্যেই, বাংলাদেশের মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির পর বাংলাদেশের নাগরিকরা শীঘ্রই চিকিৎসার জন্য চিনে যেতে শুরু করবেন।
ভারতকে ঝটকা দেবে বাংলাদেশ (India-Bangladesh)?
রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে যে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাস থেকে অর্থাৎ মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশি রোগীরা চিকিৎসার জন্য চিনে যেতে পারেন। এদিকে, অনুমান করা হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে রোগীরা চিনে চিকিৎসার জন্য গেলে কলকাতার হাসপাতালগুলিকে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হতে পারে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আগে প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার রোগী চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসতেন। কিন্তু বাংলাদেশে এখন রোগীর সংখ্যা কমেছে। যার কারণে কলকাতা এবং ত্রিপুরার অনেক হাসপাতালের রেভিনিউতে প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশের পতন ঘটেছে।
এদিকে, বাংলাদেশ ও চিনের মধ্যে চলমান আলোচনা অনুসারে, চিনের ইউনান প্রদেশের ৩ টি শীর্ষ হাসপাতালকে বাংলাদেশ থেকে রোগীদের ভর্তি করার জন্য মনোনীত করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যম “প্রথম আলো” এই বিষয়টি জানিয়েছে। ওই হাসপাতালগুলির মধ্যে রয়েছে ইউনান প্রদেশের ফার্স্ট পিপলস হাসপাতাল, কুনমিং মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হাসপাতাল এবং চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ মেডিকেল সায়েন্সেসের ফুওয়াই ইউনান হাসপাতাল। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশি রোগীদের সহজে ভিসা দিতে চিন সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এছাড়া রোগী ও হাসপাতাল প্রশাসনের মধ্যে যোগাযোগে যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেজন্য ট্রান্সলেটর নিয়োগের কাজও করা হচ্ছে।
চিনে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা হবে: বাংলাদেশি মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মোহাম্মদ ইউনূসের সরকার সম্প্রতি ঢাকায় বাংলাদেশ-চিন মৈত্রী হাসপাতাল স্থাপনের জন্য চিনের সাথে যোগাযোগ করেছে। এরপর হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিস্তারিত প্রস্তাব চেয়েছে চিন। এছাড়াও, গত বছরের জুলাই-অগাস্টে সম্পন্ন হওয়া বিদ্রোহে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য বিশেষ আধুনিক উপকরণ দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে চিন। এর আগে বাংলাদেশ অভিযোগ করেছিল যে, ভারত (India-Bangladesh) রোগীদের ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা শুরু করেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ১২ লক্ষ বাংলাদেশি রোগী ভারতে আসেন। কিন্তু, গতবছরের ঘটনার পর তাঁদের অনেকেই সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর এবং ব্যাঙ্ককে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: পাত্তা পেলনা আমেরিকার হুমকি! ভারত-রাশিয়ার বন্ধুত্বে তৈরি হল নয়া রেকর্ড
তবে, বাংলাদেশের এসব অভিযোগে ভারত (India-Bangladesh) কখনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। কিন্তু বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র গত মাসে তার ওয়েবসাইটে বলেছিল যে তারা বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সীমিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লট উপলব্ধ করছে। সেক্ষেত্রে যাঁদের জরুরি চিকিৎসা এবং ছাত্র ভিসার প্রয়োজন তাঁরা এই সুবিধা নিতে পারেন। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকা পর্যন্ত ভারতীয় ভিসা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশে ৫ টি কেন্দ্র কাজ করত। যেখানে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার মানুষ ভারতীয় ভিসা পাওয়ার। কিন্তু এখন মাত্র ৫ শতাধিক আবেদন জমা পড়ছে। এটি বাংলাদেশের ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, এর আগে, মোহাম্মদ ইউনূসের সরকার আলু ও পেঁয়াজ কেনার জন্য ভারত ছাড়া অন্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে বলেও খবর সামনে এসেছিল।