বাংলাহান্ট ডেস্ক: আজ থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Pariksha)। অনেক পড়ুয়ার কাছেই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা এটি। কিন্তু পরীক্ষা দিতে বসার আগেই এক পরীক্ষার্থী নাবালিকার উপর অ্যাসিড হামলার (Acid attack) ঘটনা সামনে এল। এর জেরে গুরুতর জখম হয়েছে তার ডান হাত। পরীক্ষার ঠিক আগেই এই ঘটনা ঘটলেও মনের জোর হারায়নি ওই ছাত্রী। বরং হাসপাতাল থেকেই ‘রাইটার’ নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে সে।
আক্রান্ত নাবালিকা বীরভূম (Birbhum) জেলার নলহাটি থানা (Nalhati) এলাকার একটি স্কুলে পড়ে। সেখানে পড়াশোনায় ভাল বলেই পরিচিত সে। স্কুল সূত্রে খবর, এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার জন্য জোরকদমে প্রস্তুতি নিচ্ছিল ওই ছাত্রী। কিন্তু তার মাঝেই মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘটে যায় এই ঘটনা। অ্যাসিড হামলা হয় তার উপর। যার জেরে গুরুতর আহত হয় সে।
নাবালিকার অভিযোগ, “মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ আমি বাড়িতে বসে পড়াশোনা করছিলাম। সেই সময় বাইরে থেকে আমায় একজন ডাকে। ছাদ থেকে দেখি আমাদের স্কুলেরই একটি ছেলে আমায় ডাকছে। বাড়ির বাইরে বেরোতেই সে আমায় জানায় যে আমার জন্য উপহার এনেছে। এরপর আমি হাত বাড়িয়ে সেটি নিতে গেলে সে একটি কৌটো বের করে আমার হাতে অ্যাসিড ছুড়ে দেয়।”
এই ঘটনার জেরে সে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে। এই সময়েই অভিযুক্ত তার দিকে একটি চিঠি ছুঁড়ে দিয়ে চলে যায়। অনেক দূরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মোটরসাইকেলে করে অন্য একজনের সঙ্গে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় সে। এরপরেই নলহাটি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আক্রান্ত নাবালিকা। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
নাবালিকা জানিয়েছে, ওই চিঠিতে তার তিনজন সহপাঠীর নাম লেখা ছিল। পড়াশোনা সংক্রান্ত রেষারেষির কারণে তার উপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই চিঠিতে লেখা ছিল, ‘তোকে আমরা পশ্চিমবঙ্গে এক থেকে দশম স্থানের মধ্যে আসতে দেব না। তোর উপর অ্যাসিড হামলা না করলে তুই অনেক দূরে এগিয়ে যেতিস। তাই এই হামলা করতে বাধ্য হলাম।”
আক্রান্ত নাবালিকার মায়ের দাবি, “নলহাটি থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আমরা চাই দোষীরা যাতে খুব তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে ও তাদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।” তিনি আরও জানান, তাঁর মেয়ে এই অবস্থাতেও নিজেই পরীক্ষায় বসতে চেয়েছিল। কিন্তু তাঁরা তাকে একজন ‘রাইটার’ নিয়ে পরীক্ষায় বসতে রাজি করিয়েছেন। নলহাটি থানার পুলিশও জোরকদমে তদন্ত করছে। জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই দোষীকে গ্রেফতার করা হবে।