বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (Pradhan Mantri Awas Yojana) দুর্নীতিতে জড়িতদের নিয়ে একটি তালিকা তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। সেই তালিকার ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে। কিন্তু এফআইআর গুলি কার বিরুদ্ধে করতে হবে, কোন এলাকায় করতে হবে তা বুঝে উঠতে পারছে না রাজ্য। এমন অবস্থায় রিপোর্টের সবিস্তার চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government) দ্বারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার।
এই প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেছেন, “বোঝা যাচ্ছে না কেন্দ্রের পাঠানো রিপোর্ট। তাও আমরা সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি। এরপরে জানানো হবে কেন্দ্রকে।” সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে দশটির মধ্যে সাতটি জেলায় গরমিলের খবর কেন্দ্র জানিয়েছে রাজ্যকে। কিন্তু এই গরমিলের সাথে কারা যুক্ত বা কোন এলাকায় ঘটেছে সেই তথ্য রিপোর্টে জানানো হয়নি।
জানা গিয়েছে, ৫৩১ জন উপভোক্তার তালিকা পাওয়া গিয়েছে মুর্শিদাবাদে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের কমিটির সমীক্ষায়। কিন্তু সেখানে যোগ্য উপভোক্তা ২৫ জন। কিন্তু ওই এলাকায় অযোগ্য কারা, কাদের কারণে ত্রুটিপূর্ণ তালিকা তৈরি হল সেই বিষয়ের কোনও উল্লেখ নেই কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টে।
পঞ্চায়েত দফতরের কর্তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় রিপোর্টে বলা হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে যথাযথভাবে হয়নি যাচাই প্রক্রিয়া। এছাড়াও দেওয়া হয়নি পর্যাপ্ত সময়।
আবার সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে ঘুষ নেওয়ার কোনও অভিযোগ মেলেনি। অথচ সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে যাচাই দলের লোকেরা নিজেদের কাজের প্রতি সুবিচার করেননি ও সমঝোতা করেছেন অযোগ্যদের তালিকায় ঠাঁই দেওয়ার ব্যাপারে। এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারের এক আধিকারিক বলছেন, এতো পরস্পর বিরোধী মন্তব্য। ঘুষ নেওয়ার যদি কোনও প্রমাণ না থাকে তাহলে কিভাবে একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়াও রাজ্য বলেছে, উল্লেখিত জেলাগুলি ছাড়াও প্রায় একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, কালিম্পং, দার্জিলিং এবং নদিয়ার ক্ষেত্রেও। কিন্তু কিসের প্রেক্ষিতে এই অভিযোগ আনা হয়েছে তার কোনও সুস্পষ্ট তথ্য ও প্রমাণ রিপোর্টে নেই। প্রথমে উপভোক্তা তালিকায় নাম ছিল ৫৪ লক্ষের। এরপর ১৭ লক্ষের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পঞ্চায়েত মন্ত্রী বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার গরীবদের বঞ্চিত করতে পন্থা খুঁজছে।
এই বিষয়ে বিজেপি নেতা শমিক ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, যে বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে তার তথ্য থাকবে কেন্দ্রের কাছে। কেন্দ্র এই অভিযোগের সঠিক জবাব দিতে পারবে। তৃণমূলের সীমাহীন দুর্নীতি রাজ্যের মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে অসহায়তার দিকে। রাজ্য সরকার পাল্টা দাবি করে বলেছে, কেন্দ্রের বলার অনেক আগে থেকেই রাজ্য সরকার উপভোক্তা সংশোধনের কাজ শুরু করেছিল।