বাংলা হান্ট ডেস্ক: সম্প্রতি, ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ABVP আয়োজিত ছাত্রদের একটি নবীন বরণ অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় সেখানে আসেন। সেখানে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন বাবুল। শুধু তাই নয় তার সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ান পড়ুয়ারাও। এমনকি দেওয়া হয় গো ব্যাক স্লোগান পর্যন্ত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ছাত্রদের হাতে হেনস্থা’ হওয়ার পর থেকেই নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে বাবুলের। আমেরিকা সফরে গিয়ে এই সমস্ত সমস্যা গুলি আরো বেড়ে যাওয়ায় ক্যালিফোর্নিয়া হাসপাতালে চিকিত্সা করাচ্ছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কিন্তু আমেরিকাতে এই চিকিৎসা প্রসঙ্গে বাবুল স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি সরকারি টাকায় চিকিত্সা করাতে যাননি। গানের অনুষ্ঠানের কারণেই সেখানে গিয়েছেন।
জানা গেছে লস এঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অফ আরভিনে বেশ কয়েকটি মেডিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে বাবুলের। হয়েছে এমআরআই। তিনি জানিয়েছেন, ‘বাঁ চোখের মণির পেছনে কান পর্যন্ত খুব যন্ত্রণা হয়। এর জন্য রোজ অসহ্য মাথা ব্যাথা হয়। আধুনির বাংলার ছাত্র হিসেবে পরিচিত কয়েকজন যাঁরা নিজেদের মাওবাদী ও SFI বলে উল্লেখ করে, তাঁদের পাথর ছোড়া, কালো পতাকা জড়ানো লাঠির আঘাত, ঘুঁষির কারণে এ সব হয়েছে। কী হয়েছে সেটা বড় কথা নয়। এটা প্রাণঘাতীও নয়। কিন্তু কী ভাবে গুণ্ডারা বাইরের দরজা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকল, সেটা সত্যিই উদ্বেগের। রাজনীতির কারণে নয়, শিক্ষার কারণেই এই নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত।’
বাবুল আরও জানান, ‘অনেকেই বোকামি করে বলছেন, সরকারি খরচে চিকিত্সার জন্যই আমি আমেরিকা এসেছি। তা নয়। প্রবাসী ভারতীয়দের অনুষ্ঠানে গান গাইতে লস এঞ্জেলেস ও লন্ডনে এসেছি। রোজ প্রচন্ড যন্ত্রনা হচ্ছে, আমার আমেরিকার স্বাস্থ্যবিমা আছে, তাই বন্ধুবান্ধব আর আমার স্ত্রী জোর করে ডাক্তারের কাছে পাঠাল!’
উল্লেখ্য, আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এবিভিপির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। তখন তাকে ঘেরাও করেন পড়ুয়ারা এমনকি বিক্ষোভ দেখানোও শুরু করেন তারা। ঘটনাচক্রে যাদবপুরে পড়ুয়ারা চেঁচামেচি করেন যে কোনমতেই বাবুলকে ঢুকতে দেওয়া হবে না বাবুলকে ঢুকতে দেওয়া হবে না যাদবপুর ক্যাম্পাসে। শুধু তাই নয় বাবুলের চুল জামা ধরে টানাটানি শুরু করেন সকলে। ‘বাবুল গো ব্যাক’ স্লোগান ওঠে। ধাক্কাধাক্কিতে বাবুল একবার পড়েও যান।
ঘটনাচক্রে পরিস্থিতি এমনই অপ্রীতিকর হয়ে উঠেছে সেখানে হাজির হন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তিনি বাবুলকে তাঁর ঘরে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু আসানসোলের সংসদ স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে তিনি যে কাজের জন্য এসেছেন তা পূরণ করবেনই। এবিভিপির নবীন বরণ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বিজেপির এই নেতা। সংগঠকরা দাবি জানিয়েছেন যে একজন সঙ্গীতশিল্পী হিসেবেই বাবুলকে এদিন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল যাদবপুর ইউনিভার্সিটি তে। পরে উপাচার্যের মধ্যস্থতায় সভামঞ্চে পৌঁছন বাবুল।
এই ঘটনায় এসএফআই দাবি জানিয়েছে তারা প্রথমে বাবুলকে বাধা দেয়নি। বিজেপির নীতির বিরুদ্ধে তাদের মূল অভিযোগ। তারা দাবি করেছেন যে বাবুল ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে তাঁর গায়ে হাত তোলার মিথ্যে অভিযোগ আনেন।’ যাদবপুর ছাত্রদের আর একাংশের দাবি দাবি, ধাক্কাধাক্কি চলাকালীন বাবুলের নিরাপত্তারক্ষীরা ছাত্রীদের গায়ে হাত দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে যাদবপুর ক্যাম্পাসে ঢুকতে আটকাতে বাধ্য হন এসএফআই সহ এবিভিপির বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি।