বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গোটা বঙ্গ জুড়ে এখন একটিমাত্র প্রশ্ন ঘুরে ফিরে চলেছে, লটারিতে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) কোটি টাকা প্রাপ্তি আসলে কি সত্য ঘটনা, নাকি এর পিছনে রয়েছে কোন গভীর ষড়যন্ত্র? আর এ সকল প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে তৎপর হয়ে উঠেছে সিবিআই (CBI) অফিসাররা। এক্ষেত্রে বোলপুরের লটারি দোকানে যাওয়ার পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা অনুব্রত মণ্ডলকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা। তবে এক্ষেত্রে বিশেষ কোনো জবাব মেলেনি বলেই দাবি তদন্তকারী অফিসারদের। একইসঙ্গে লটারি টিকিটের সঙ্গে গরু পাচার মামলার কোন যোগসূত্র রয়েছে কিনা, সেই বিষয়টিও তদন্ত করে দেখছে সিবিআই।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এরপর থেকেই অনুব্রত এবং তার আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির হদিশ মেলে। একইসঙ্গে অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি এবং জমির সন্ধান পায় সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে বর্তমানে তাদের নজরে এসেছে লটারি কাণ্ড।
উল্লেখ্য, এ বছরের শুরুর দিকে একটি ছবি ক্রমাগত ভাইরাল হতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়, যেখানে দেখা যায় তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল লটারিতে এক কোটি টাকা জয় লাভ করেছেন। পরবর্তীতে অনুব্রত জানান, “আমার নিরাপত্তা রক্ষীদের কাছ থেকে লটারির টিকিট কেটে কোটি টাকার প্রাপ্তির কথা অনেক শুনি। সেই সময় আমি তাদেরকে এক প্রকার মজার ছলে টিকিট কাটতে বলি। আর তাতে কোটি টাকা প্রাপ্তির ঘটনা ঘটে। তবে সেই টিকিটটা ছিল নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে।”
তবে গত কয়েকদিনে লটারি কাণ্ডে উঠেপড়ে লেগেছে সিবিআই। অনুব্রত ইস্যুতে গত বুধবার বাপি গঙ্গোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। উল্লেখ্য, যে লটারি দোকান থেকে টিকিট কেটে কোটিপতি হয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, সেই দোকানেরই মালিক বাপি গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি বাপিকে আরও কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি বোলপুরের ওই লটারির দোকানে পৌঁছে যায় সিবিআই অফিসাররা। এরপরই অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং আরো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, সব মিলিয়ে অ্যাকশনে সিবিআই।
যদিও অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তাঁর কাছ থেকে বিশেষ কোনো জবাব মেলেনি বলেই সূত্র মারফত খবর সামনে আসছে। সিবিআই সূত্রের খবর, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই লটারির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করে চলার ষড়যন্ত্র করা হয়ে চলেছে। এক্ষেত্রে এক কোটি টাকার লটারি জিতলে সেক্ষেত্রে ৬৮ থেকে ৬৯ লক্ষ টাকা পান বিজেতা। অনেক সময় গরিব ব্যক্তিদের কয়েক লাখ টাকার লোভ দেখিয়ে সেই টিকিট কিনে নেন ষড়যন্ত্রকারী কিংবা প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
এক্ষেত্রে সিবিআইয়ের নজরে রয়েছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে সঙ্গতিহীন বিশাল অঙ্কের টাকার লেনদেন। সূত্রের খবর, যেকোনো অ্যাকাউন্টে ১০ লক্ষ টাকার বেশি জমা করলে সেই তথ্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে আয়কর দফতরে চলে যায়। ফলে এই সকল বিষয়গুলিকে সামনে রেখেই তদন্ত অগ্রসর করে নিয়ে চলেছে তদন্তকারী অফিসাররা।
যদিও এই প্রসঙ্গে এদিন অনুব্রত মণ্ডলের পাশেই দাঁড়িয়েছেন কলকাতার মেয়র তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “বিরোধীরা বলছে, কি করে লটারি পেল? আরে ভাই লটারি পেল কেন, তা তোমায় খোঁজ নিতে হবে না। আসলে অনুব্রত মণ্ডলের চরিত্রহনন করার চেষ্টা করা হয়ে চলেছে।”