বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একেই করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে জর্জরিত গোটা দেশ, মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ঠিক আছে তলানীতে, তার ওপর রেশন বিতরণের কাজে গরিমসির অভিযোগ উঠল ফুড কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে। আট দিন কেটে যাবার পরেও রাজ্যে চালু হলো না কেন্দ্র সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের নেশন। ঠিক ছিল মে ও জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় মাথাপিছু ৫ কিলো করে চাল পাবেন রাজ্যবাসী। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ সামনে আসতেই বহুদিনের দাবি মেনে ফের দুমাসের জন্য বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র সরকার।
কিন্তু সূত্রের খবর অনুযায়ী অন্য রাজ্যের প্রকল্প চালু হয়ে গেলেও এরাজ্যে বরাদ্দ অনুযায়ী ধানই এখনো কেনা হয়নি। এনিয়ে মৌখিকভাবে ফুড কর্পোরেশনের সঙ্গে কথাও বলেছেন রেশন ডিলাররা। রাজ্যের কাছে বঞ্চনার অভিযোগও তুলেছেন তারা। তাদের বক্তব্য, এই নির্বাচনে বিজেপির হারের ফলেই মুখ ফিরিয়েছে কেন্দ্র। আর সেই কারণেই এ রাজ্যে এখনও বরাদ্দ চাল কেনার প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি বলে অভিযোগ তাদের। তবে ফুড কর্পোরেশনের একাধিক আধিকারিকের করোনা আক্রান্ত হবার খবরও সামনে এসেছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ওই সংস্থায় এই মুহূর্তে যথেষ্ট আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে কোভিড। ফলে প্রায় বন্ধ হবার জোগাড় সরকারি সমস্ত কাজ। তাদের পরিবর্তে অন্য কাউকে এনে কাজ করানোর পরিস্থিতিও নেই। এই অবস্থায় রাজ্যের জন্য বরাদ্দ চাল কেনা ও ব্যবস্থাপনা দেখভাল করার লোকের অভাবে ভুগছে ফুড কর্পোরেশন। সমস্যার কথা মেনে নিয়ে সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “কেন্দ্রের বরাদ্দ অনুযায়ী বিনামূল্যে এ রাজ্যের জন্য রেশনের চাল পাঠানোর কাজ ফুড কর্পোরেশন শুরুই করেনি। যতটুকু খবর মিলেছে, তাতে এখনও চাল কিনতে পারেনি তারা। তার সঙ্গে কোভিডের কারনে গৃহবন্দি অনেকেই। কাজের দেখভাল করার লোক নেই।”
অনেকে যদিও এই পরিস্থিতিতে বাইরে থেকে চাল কিনে এনে প্রকল্প শুরু করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু রেশন ডিলারদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এরাজ্যে তাদের ভাল চাল দিতে হবে। বাংলায় যে ধানের ফলন হয় তা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই উৎকৃষ্ট। রেশন ডিলারদের দাবী সেই চালই দিতে হবে ফুড কর্পোরেশনকে। চালের গুণগতমান খারাপ হলে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় রেশন ডিলারদের। সেই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এদিন রেশন ডিলার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, “এফসিআই চাল কেনা নিয়ে আগে থেকে কোনও উদ্যোগই নেয়নি। মৌখিকভাবে আমরা বলেছি। আমরা আর কদিন দেখে খাদ্য মন্ত্রকের কাছে জানাব পরিস্থিতি।”
সবমিলিয়ে বর্তমানে যে পরিস্থিতি বেশ জটিল এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। এখন শেষমেষ ঘটনার ঘনঘটা কোন দিকে মোড় নেয় সে দিকেই নজর থাকবে সকলের।