বাংলা হান্ট ডেস্কঃ NCC-কে (National Cadet Corps) তাদের বরাদ্দ টাকা প্রদান করছে না রাজ্য সরকার। কোটি কোটি টাকা বকেয়া পড়ে থাকলেও কোনরকম সহযোগিতা মিলছে না সরকারের কাছ থেকে আর সেই কারণেই বর্তমানে নতুন ক্যাডেট নেওয়া বন্ধ করার পাশাপাশি প্রশিক্ষণও বন্ধ রাখা হয়েছে। এনসিসি-র পক্ষ থেকে এহেন দাবি উঠে আসতে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র আর এবার গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ করলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattachary)।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের কাছে এনসিসির কোটি কোটি টাকা বকেয়া পড়ে থাকলেও বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। সম্প্রতি এহেন অভিযোগ সামনে আনে ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পস। এই ঘটনায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পাশাপাশি বাংলার অর্থ সচিব এবং মুখ্য সচিবকে চিঠি পর্যন্ত দিয়েছেন এনসিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত এডিজি (বাংলা ও সিকিম শাখা)।
এই অভিযোগ সামনে উঠে আসতেই বিরোধীদের তরফ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ ছুড়ে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে খেলা এবং মেলা করার জন্য বহু পরিমাণ টাকা খরচ করলেও এনসিসির বরাদ্দ কেন মেটানো হচ্ছে না, সে বিষয়ে সরকারকে ইতিমধ্যে খোঁচা দিয়েছে বিরোধী দলগুলি। সেই প্রসঙ্গে অবশেষে এদিন মুখ খুললেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “খরচের সমস্ত হিসেব দিক NCC। তবেই রাজ্য টাকা দেবে। তবে ওরা সেই হিসেব দিতে বাধ্য কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।”
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে NCC-র জনসংযোগ আধিকারিক (বাংলা শাখা) বলেন, “মার্চ মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একাধিকবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে অর্থ সচিব এবং মুখ্য সচিবের কাছে ফান্ড চেয়েছিলাম, তবে সমস্যার সমাধান হয়নি।”
তাদের দাবি, টাকা না মেলায় ক্যাম্পের আয়োজন পর্যন্ত করা যায়নি, এতে সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়ে ক্যাডেটরা। এমনকি এক্ষেত্রে নতুন করে ক্যাডেট নিয়োগ পর্যন্ত করতে পারেনি এনসিসি। আর এই পরিস্থিতিতে ১০ কোটি বকেয়া টাকার মাঝেই তাদের সকল ফান্ড বন্ধ করার খবর প্রসঙ্গে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, এনসিসির খরচ বাবদ কেন্দ্রের তরফ থেকে ৭৫% দেওয়া হলেও বাকি ২৫ শতাংশ প্রদান করার দায়িত্ব থাকে রাজ্য সরকারের ওপর। তবে এক্ষেত্রে অর্থ না মেলায় বিপাকে এনসিসি। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করে এদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “তোষণের জন্য ওদের কাছে টাকা মজুত রয়েছে। কিন্তু যেখানে যুব সমাজের উন্নয়ন হবে, সেখানে টাকা দেওয়ার মত মানসিকতা নেই সরকারের।”
পাশাপাশি বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “খেলা এবং মেলাতে খরচ করতে গিয়ে রাজ্যের কোষাগার ফাঁকা। এক্ষেত্রে ফান্ড যদি বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে ক্যাডেটরা সমস্যার সম্মুখীন হবে।” যদিও বিরোধীদের এ সকল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
প্রসঙ্গত, এনসিসি হল ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর যুব শাখা। স্কুল এবং কলেজের সকল পড়ুয়াই এখানে অংশগ্রহণ করতে পারে। সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানের আগে সকলকে সঠিক প্রশিক্ষণ দেওয়াই NCC-র প্রধান লক্ষ্য। তবে বর্তমানে রাজ্য সরকারের কাছে তাদের বকেয়া টাকা পড়ে থাকলেও আচমকাই ফান্ড বন্ধ করে দেওয়ার খবর সামনে আসতেই ইতিমধ্যে বেকায়দায় পড়েছে বাংলার সকল ক্যাডেটরা।