বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাংলাদেশে (Bangladesh) ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর থেকে যেন অশান্তি চরমে উঠেছে। ধৃত চিন্ময় কৃষ্ণের হয়ে আইনি লড়াই লড়তে গিয়েছিলেন আইনজীবী রমেন রায়। কিন্তু কট্টরপন্থীদের ভয়াবহ আক্রমণের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আইনজীবী। তাঁর পরিবারের ইচ্ছা, তাঁকে বাংলাদেশের (Bangladesh) বাইরে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র চিকিৎসা করানোর।
বাংলাদেশের (Bangladesh) হাসপাতালে ভর্তি চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশের (Bangladesh) শাহবাগে যে বিক্ষোভ আন্দোলন হয়েছিল সেখানে যোগ দিয়েছিলেন আইনজীবী রমেন্দ্রনাথ রায় ওরফে রমেন রায়। সেই আন্দোলনেই তাঁর উপরে লাঠি নিয়ে চড়াও হয় মৌলবাদীরা। প্রচণ্ড মারধোরে গুরুতর আহত হন তিনি। বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আইনজীবী। আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে সেদিনের পর থেকে আর জ্ঞান ফেরেনি তাঁর। সরকারি সাহায্য তো দূর অস্ত, এখন দাদার প্রাণ বাঁচাতে তাঁকে বাংলাদেশের (Bangladesh) বাইরে নিয়ে যেতে চাইছেন পরিবার।
সেদিনের অভিজ্ঞতা জানান আইনজীবীর বোন: এবিপি আনন্দর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সেদিনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন আইনজীবী রমেন রায়ের বোন চন্দ্রা রায়। তিনি জানান, চিন্ময় প্রভু যেদিন গ্রেফতার হন, সেদিন তাঁর মুক্তির দাবিতে শাহবাগে আন্দোলনে গিয়েছিলেন তাঁর দাদা। সেখানেই হামলা চালানো হয় তাঁর উপরে। আইনজীবীর বোন জানান, একটি ভাইরাল ভিডিওতে তাঁরা দেখেছিলেন, লাঠি দিয়ে মাথায় বাড়ি মারা হয়েছিল রমেন রায়ের।
আরো পড়ুন : রাতারাতি প্যান ইন্ডিয়া স্টার, একটি ছবিই বদলে দেয় কেরিয়ার, জাতীয় পুরস্কারও ছিনিয়ে নেন এই অভিনেতা!
জ্ঞান ফেরেনি আইনজীবীর: আইনজীবীর বোন জানান, মাথার আঘাত এতটাই গুরুতর যে খুলি ফেটে যায় তাঁর। এক সাইডে খুলি খুলে রাখা হয়েছে। এটাই সবথেকে মেজর চোট বলে জানান রমেন রায়ের বোন। এছাড়াও সারা শরীরে আরো চোট আঘাত রয়েছে তাঁর। দাদার অবস্থা দেখে কার্যত ভেঙে পড়েছে তাঁর বোন। সেদিনের পর থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থাতেই হাসপাতালের বেডে পড়ে রয়েছেন তিনি। এমনকি তাঁদের পরিবারেরও কোনো নিরাপত্তা নেই বলে জানান চন্দ্রা। পরিবারের আরো সবাই বেঁচে থাকবেন কিনা, জানেন না তাঁরা।
আরো পড়ুন : ফকির থেকে রাজা, বচ্চন বা খান নয়, একসময় ফল বেচত বলিউডের সবথেকে ধনী এই পরিবার!
ইউনূস সরকারের উপরেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন আইনজীবীর বোন। তাঁর অভিযোগ, সরকারের তরফে যোগাযোগ করে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু না এসেছে সাহায্য, না করা গিয়েছে যোগাযোগ। বাংলাদেশে (Bangladesh) এমনিতেই চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নত নয়। এমতাবস্থায় ঢাকার ওই বেসরকারি হাসপাতালে একদিনের খরচই বাংলাদেশের প্রায় ১ লক্ষ টাকা বলে জানান চন্দ্রা। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে রমেন রায়ের প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা। তার জন্য তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে অন্যত্র নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু তার যা খরচ তা বহন করার মতো সামর্থ্য তাঁদের পরিবারের নেই। সরকার পাশে নেই। উপরন্তু প্রশ্ন উঠছে, চট্টগ্রাম আদালতে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের বিচার পেতে এত তৎপর প্রশাসন। তবে বাংলাদেশেরই আরেক নাগরিক রমেন রায়ের ক্ষেত্রেই এত অবহেলা কেন?