বাংলাহান্ট ডেস্ক : গোটা বছর প্রত্যেকটা বাঙালি অপেক্ষা করে থাকে দুর্গোৎসবের (Durgapuja)। পুজোর চারটে দিন প্রত্যেক বাঙালির কাছে খুবই স্পেশাল। সারা বছরের ক্লান্তি যেন এক লহমায় দূর হয়ে যায় দেবী দুর্গার আগমনে। তবে আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ঘটনার পর বদলে গিয়েছে বাঙালির জীবন-যাপন। ঘর মুখো বাঙালি নেমে এসেছে রাজপথে।
কলকাতার পুজোয় (Durgapuja) ফিরলো অতীতের স্মৃতি
দিকে দিকে চলছে প্রতিবাদ। ‘তিলোত্তমা’র সুবিচারের আশায় রাস্তা দখল করছেন ৮ থেকে ৮০ সবাই। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে উৎসবে ফেরার আহ্বান জানান। তবে অনেকেই বলছেন, পুজোয় ফিরব, কিন্তু উৎসবে নয়। গড়িয়াহাট থেকে এসপ্লানেড, হাতিবাগান মার্কেট থেকে শপিং মল, দোকানদাররা বলছেন পুজোর (Durgapuja) ভিড় সেই অর্থে নেই বললেই চলে।
কেনাকাটা কমেছে অনেকটা। যার কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আরজি কর হাসপাতালে নারকীয় ঘটনা। ‘তিলোত্তমা’র জন্যই এবছর পুজোয় আগে মন ভালো নেই শহর তিলোত্তমার। পাশাপাশি ডিভিসি জল ছাড়ায় বাংলার একাধিক গ্রামে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে শুধু এবছরই নয়, ৪৬ বছর আগেও এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল বাংলায়।
আরোও পড়ুন : ‘অনেক লাথি-ধাক্কা খেয়েও, শিক্ষা হয়নি!’ কেন এমন বললেন কৌশানি?
১৯৭৮ সালে গোটা বাংলা জুড়ে দেখা দিয়েছিল ভয়াবহ বন্যা। গ্রামে গঞ্জে প্রাণ হারিয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। বন্যা আর তার সাথে একের পর এক মৃত্যু, সব মিলিয়ে ১৯৭৮ সালের শারদ উৎসব হয়েছিল নম-নম করে। ১৯৭৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর শুরু হয় ভয়ানক বৃষ্টি। তিন দিনের রেকর্ড বৃষ্টিতে জলের তলায় চলে যায় দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
৯৪৪.৭ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছিল ১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। অঝোর বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়েছিল বাঁধ, ভেঙে গিয়েছিল হাজার হাজার বাড়ি। এমনকি দুর্যোগের কবল থেকে বাদ যায়নি কলকাতাও (Kolkata) । কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে শুধুই জল আর জল। তিলোত্তমাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হয়েছিল প্রশাসনকে।
মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ জেলা সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সে বছর। জানা যায়, সে বছর বহু গ্রামেই দুর্গাপুজা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। যেখানে সম্ভব হয়েছে সেখানে খুবই সাধারণ ভাবে বরণ করা হয়েছিল দেবী দুর্গাকে। কলকাতার দুর্গাপুজোতেও (Durgapuja) ছিল না জাঁকজমক। আজও সেদিনের কথা ভাবলে আঁতকে ওঠেন প্রবীণরা।