MBA চা ওয়ালার পর এবার ইঞ্জিনিয়ার চা ওয়ালা! দোকান ছাড়াই করছেন চাকরির চেয়ে বেশি আয়

বাংলা হান্ট ডেস্ক: MBA চা ওয়ালার খবর কমবেশি সকলেই আমরা শুনেছি কিন্তু, আজ আমরা এমন একজনের কথা বলবো যিনি বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন ইঞ্জিনিয়ার চা ওয়ালা নামে! আহমেদাবাদের “সুভাষ সেতু”র কাছে এমন চায়ের স্টল পাবেন যার নাম “ইঞ্জিনিয়ার নি চায়ে” অর্থাৎ ইঞ্জিনিয়ারের চা।

২৯ বছর বয়সী একজন ইঞ্জিনিয়ার রাস্তার পাশে কোনো দোকান ছাড়াই টেবিলের ওপর এমন চা বানাচ্ছেন, যার স্বাদ একবার পেলেই সবাই আবারও এখানে আসছেন। এখানে আপনি চা সহ বিনামূল্যে বিস্কুট এবং পড়ার জন্য কিছু বই পাবেন। এর পাশাপাশি, এখানে প্রতিদিন তিনটি সংবাদপত্র আসে, অর্থাৎ এখানে চায়ে চুমুক দিয়েই খবরের মজাও পাবেন চা খেতে আসা লোকজন।

রৌনক রাজবংশী ২০২০ সাল থেকে “ইঞ্জিনিয়ার নি চায়ে” নাম দিয়ে এই ব্যবসা চালাচ্ছেন। ব্যবসাটি থেকে তিনি যে শুধু ভালো রোজগারই করছেন তা না, পাশাপাশি, তিনি তাঁর অনন্য স্টাইল দিয়ে শহরজুড়ে বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন।

২০১৫ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করা রৌনক রাজবংশী ছোটবেলায় ডাক্তার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মায়ের ক্যান্সার হওয়ায় সেখানেই চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। সেজন্য তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নেন। রৌনক সবসময়ই এমন কিছু কাজ করতে চাইতেন, যাতে তিনি সাধারণ মানুষের সাথে যুক্ত হতে পারেন।

তাঁর বাবা একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন বহু বছর ধরে। পড়া শেষ করার পর রৌনক যখন ভালো কোনো চাকরি পাচ্ছিলেন না, তখন তিনি সব সময় বাবাকে বলতেন একসাথে কোনো ব্যবসা শুরুর কথা।

এই প্রসঙ্গে রৌনক জানিয়েছেন, “আমি যখন আমার বাবাকে চায়ের দোকান খোলার কথা বললাম, তখন তিনি ভয় পেয়ে বললেন, লোকে কী বলবে? কিন্তু আমি তাঁকে বুঝিয়েছি যে, আমরা যদি খুশি থাকি এবং ভালো করি, তাহলে আমরা তাঁদের কথা বলা কাজের মাধ্যমেই বন্ধ করে দেব।”

অবশেষে ২০১৮ সালে, তিনি তাঁর বাবার সাথে একটি চায়ের স্টল শুরু করেন। ওই সময়ে তিনি চায়ের দোকান চালানোর পাশাপাশি সরকারি পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। এদিকে, ধীরে ধীরে রৌনক তাঁর বাবার সাথে কাজ করে বুঝতে পেরেছিলেন যে, চায়ের একটি আলাদা মানবিক অনুভূতি রয়েছে এবং এই ব্যবসা কখনই ব্যর্থ হতে পারে না। এরপরই তিনি নিজেই একটি আলাদা চায়ের ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন।

WhatsApp Image 2022 02 19 at 6.57.51 PM
সিধান্ত অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর রৌনক “ইঞ্জিনিয়ার নি চায়ে” নামে একটি ছোট ব্যবসা শুরু করেন। এই প্রসঙ্গে রৌনক জানান যে,“চা পান করার পর গ্রাহকদের মুখে যে আনন্দ ও সতেজতা দেখতে পাই, তা আমাকে তৃপ্তি দেয় এবং আমি কোনো কাজেই এই তৃপ্তি পাব না।”

যদিও, তিনি বর্তমানে তাঁর ব্যবসার অবস্থান সম্পর্কে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, যার সমাধান করতে তিনি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নিজের “ফুড ট্রাক” চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অর্থাৎ, আগামী দিনে চায়ের সঙ্গে কিছু গরম জলখাবারও রৌনক উপহার দিতে চলেছেন ক্রেতাদের।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর