বাংলা হান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট দিতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই ইমরানের অনেক সহযোগী পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন জোট থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছে। এমতাবস্থায়, সংখ্যার বিচারে এখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে ইমরান খান সরকার।
এছাড়াও, বর্তমানে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাঁর পরাজয়ের বিষয়টি আঁচ করতে সক্ষম হয়েছেন। সেই কারণেই তিনি অন্য পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলেছেন। পাকিস্তানি গণমাধ্যমের মতে, অনাস্থা প্রস্তাবের সময় ইমরান খান কার্যত নিজেকেই “শহীদ” বানাতে চান। তারপরই ইমরান তৎকাল নির্বাচনের দিকে এগোতে পারেন।
এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানি সংবাদপত্র দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, সেদেশের ক্ষমতায় থাকা দল, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (PTI) প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব পালনে সফল হলে পরিস্থিতি মোকাবেলার কৌশল তৈরি করেছে। সূত্র জানিয়েছে, PTI ইলেকট্রনিক ভোটিং বাস্তবায়ন এবং জাতীয় পরিষদ (এনএ) দ্বারা অনুমোদিত বিদেশী পাকিস্তানিদের ভোট দেওয়ার অধিকার সহ নির্বাচনী সংস্কার অর্জনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আগামী জয় নিশ্চিত করতে পারে। তারপরেই বর্তমান দল গণবিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করবে এবং ক্ষমতায় ফেরার ক্ষেত্রে সমর্থন আদায়ের জন্য নির্বাচনী প্রচারও চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে।
অনুগত নেতাদের আগামী নির্বাচনে টিকিট দেওয়া হবে:
সূত্র অনুযায়ী আরও জানা গিয়েছে, দেশের সব বড় বড় শহর ও জেলায় জনসভা এবং সর্বস্তরে প্রতিবাদ করা হবে। দলের সিনিয়র ও অনুগত কর্মী ছাড়াও নেতাদের আগামী নির্বাচনে টিকিট দেওয়া হবে এবং কোনো অসন্তুষ্ট সদস্য দল পুনর্গঠনে জড়িত থাকতে পারবেন না বলেও জানা গিয়েছে।
এদিকে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এক্কেবারে শীর্ষ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ স্তর পর্যন্ত একটি ঐক্যবদ্ধ কাঠামো তৈরি করা হবে। সূত্রের খবর, বিধায়করা এখনই পরিষদ থেকে পদত্যাগ করবেন না। বরং পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
PTI সূত্রে জানা গিয়েছে যে, পাকিস্তানে ক্ষমতায় থাকা ইমরানের দল গত সাড়ে তিন বছর ধরে চলা “বিদেশি হুমকি” এবং সরকারের কর্মক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধীদের ভূমিকা সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করার জন্য একটি প্রচার চালাবে। পাশাপাশি, কোনো বিভ্রান্ত সদস্য ও নেতারা আবার সংগঠনে যোগ দিতে পারবেন না।
এছাড়াও, ইমরান খান জনগণকে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সম্পর্কে অবহিত করতে পারেন। সর্বোপরি, অসন্তুষ্ট সদস্যদের এবং “ষড়যন্ত্রকারী” ব্যক্তিদের সকল স্তরে বয়কট করতেও আবেদন জানানো হবে। এই প্রসঙ্গে, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা কূটনৈতিক কৌশলগুলিতে অনুমোদন দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ইমরান খানের দল জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে:
PTI অনাস্থা প্রস্তাবের ফলাফলের পর জনসংযোগ ও প্রতিবাদ আন্দোলনের ঘোষণা করবে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দলের প্রধান কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন যে, বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা সরকারের বিরুদ্ধে “ষড়যন্ত্রের” বিষয়টি সামনে আসার পর জনগণের মধ্যে তাঁর দলের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এমতাবস্থায়, অবিলম্বে জনসংযোগ এবং প্রচার আগামী নির্বাচনে দলের জয়ের সম্ভাবনা নিশ্চিত করবে বলেও আশাবাদী তাঁরা।