বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদিকে যখন পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে হবু শিক্ষকদের হাহাকার, টেট কেলেঙ্কারি নিয়ে সরব বিরোধীরা, এমনকি রাস্তায় নেমে আন্দোলনেও বসতে হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের। তখনি সুন্দর নজির রাখল আসাম। সদ্য নির্বাচিত নতুন শিক্ষা মন্ত্রী রনৌজ পেগু জানালেন, অন্য সমস্ত শর্তাদি পূরণ করলে প্রত্যেকটি উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীই পাবেন শিক্ষকতার চাকরি। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে হয়তো পরীক্ষার্থীদের এটা একটা বড় স্বপ্ন। তবে আসামের ক্ষেত্রে বিষয়টা সম্পূর্ণ অন্য। টেটে যত জন পরীক্ষার্থী পাশ করেছেন সরকারি শূন্য পদের সংখ্যা তার চেয়ে অনেক কম। আর সেই কারণেই এই নতুন সিদ্ধান্ত শিক্ষামন্ত্রীর। শুধু তাই নয়, নতুন সরকার সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করবে বলেও এদিন দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী।
মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ” শিক্ষা ক্ষেত্রে যত শূন্য পদ রয়েছে তা পূরণ করার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে শিক্ষা বিভাগ। সরকারি প্রাথমিক অ্যাজেন্ডায় রয়েছে শূন্য পদ পূরণ। যত শূন্যপদ রয়েছে তত টেট উত্তীর্ণ প্রার্থী নেই। শূন্যপদ পূরণের জন্য টেট আয়োজন করতে হবে। না হলে অন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।” নির্বাচনী প্রচারে এক লক্ষ শূন্যপদ পূরণের আশ্বাস দিয়েছিল বিজেপি। সেই লক্ষ্যেই কাজ শুরু হলো বলে এবার দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী পেগু। তিনি জানান, আগামী ১ জুন থেকে প্রাদেশিকরনের আওতায় আসা সমস্ত শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীরা তাদের বেতন পাবেন। গত সরকারের আমলে বহু শিক্ষক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাদেশিকরন করা হলেও তারা বেতন পাননি। এবার তাদের জন্যই আশ্বাস দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পেগু।
শুধু তাই নয়, ট্রানস্ফার পোস্টিং এর ক্ষেত্রেও নিয়ম বদল করতে চলেছে আসাম সরকার। শিক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট জানান কোনরকম বিধায়ক বা নেতাদের সুপারিশে ট্রান্সফার করা হবে না। তিনি বলেন, “শিক্ষক ট্রানস্ফার ও পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে আইন রয়েছে। তবে তার বিধি এখনও প্রস্তুত হয়নি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিধি প্রস্তুত করে নিয়ম-নীতি মেনে স্বচ্ছভাবে শিক্ষকদের ট্রানস্ফার ও পোস্টিং হবে। সেখানে মন্ত্রী হিসেবে আমার ক্ষমতাও থাকবে না। এমনকি বিধায়কদের সুপারিশও কাজ করবেনা।”
আসামের নতুন শিক্ষা মন্ত্রীর বার্তায় স্বাভাবিকভাবেই আশ্বস্ত রাজ্যের চাকরি প্রার্থীরা। অন্যদিকে আমাদের রাজ্যে ব্রাত্য বসু শিক্ষা মন্ত্রী হতেই তার কাছে জমা পড়েছে শিক্ষক নিয়োগের ঝুড়ি ঝুড়ি আরজি। যা নিয়ে এখনো সেভাবে কোনো কথা হয়নি। এখন আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গেও একইভাবে স্বচ্ছ শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া লাগু হয় কিনা সে দিকেই নজর থাকবে সকলের।