বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অতীতে বাংলায় ভুয়ো শিক্ষক থেকে শুরু করে ভুয়ো চিকিৎসক পর্যন্ত ধরা পড়ে। এমনকি বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে পুলিশ থেকে বড় অফিসার পদেও ‘ভুয়ো’ পরিচয় পত্র দিয়ে একাধিক বেআইনি কাজকর্ম করার অভিযোগ উঠে আসে। তবে বর্তমানে এসকল কীর্তিকে ছাপিয়ে ‘ভুয়ো নেতা’ হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। দক্ষিণ দিনাজপুরে স্বপন মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি নিজেকে তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচয় দিলেও তাঁর সেই দাবি থেকে মিথ্যে বলে জানালো ঘাসফুল শিবির।
শুধু তাই নয়, তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে বর্তমানে এই ভুয়ো তৃণমূল নেতাকে গ্রেপ্তার পর্যন্ত করেছে পুলিশ। সম্প্রতি, দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি সভা আয়োজিত হয়, যেখানে বক্তৃতা রাখতে ওঠেন স্বপন মুখোপাধ্যায়। গোটা সভায় তাঁর বক্তব্য বহু মানুষের হাততালির কারণ হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে তাঁর মন্তব্য বেশ নজরকাড়াও ছিলো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেকের সঙ্গে নিজের সদ্ভাব প্রসঙ্গে স্বপনবাবু বলেন, “দীর্ঘ 32 বছর ধরে আমি তৃণমূল নেত্রীর ছায়াসঙ্গী হিসেবে রয়েছি। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন, আমি তাঁর পাশে ছিলাম। কয়লা মন্ত্রী থেকে শুরু করে রেলমন্ত্ৰী হওয়ার মাঝে আমি দিল্লিতে সবসময় ওর সঙ্গে অবস্থান করি। পরবর্তীকালে আপনাদের সকলের নয়নের মণি ও যুব আইকন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আমি রয়েছি।” এরপরেই গোটা সভায় হাততালি দিয়ে ওঠে সকল নেতাকর্মীরা।
এই প্রসঙ্গে বর্তমানে আসরে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি উজ্জ্বল বসাক বলেন, “উনি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা নন। সভায় দাঁড়িয়ে তিনি যে বক্তব্য পেশ করেছেন, তা মিথ্যে আর এই ঘটনাটি আমাদের সামনে উঠে আসার পরেই পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি।” ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, আচমকা তৃণমূল নেতা হিসেবে নিজেকে দাবি করার পিছনে স্বপন মুখোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্য কি?
এছাড়াও সভা চলাকালীন তিনি বলেন, “আগামী দিনে আপনাদের সকলের প্রিয় প্রশান্ত মিত্র জেলার দায়িত্ব নিতে চলেছেন।” যদিও এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাঁর এই দাবি নাকচ করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে ওই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছে তারা। অবশ্য হেফাজতে যাওয়াকালীন স্বপনবাবুকে ধরা হলে তিনি বলেন, “আমি তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী। আমার প্রতি যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে, তা মিথ্যে।”
তৃণমূলের অন্দরে এই বিতর্ক প্রসঙ্গে তাদের কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার এক বিজেপি নেতা বলেন, “তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ক্রমশ বেড়ে চলেছে আর সেই কারণে ওরা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে চলেছে। এটাই ওদের সংস্কৃতি।”