অবৈধ রোহিঙ্গা মুসলিমদের ভারতে কোনও জায়গা নেই! সুপ্রিম কোর্টে স্পষ্ট জানাল কেন্দ্র

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে গোটা দেশজুড়ে লাগু হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। ভোটের আবহে এই নিয়ে মাথাচাড়া দিয়েছে নতুন বিতর্ক। এসবের মাঝেই এবার সুপ্রিম কোর্টে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিয়ে উল্লেখযোগ্য হলফনামা দিল কেন্দ্র। সেখানে সাফ বলা হয়েছে, বেআইনিভাবে ভারতবর্ষে ঢুকে পড়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের (Rohingya Muslims) থাকতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি এও দাবি করা হয়েছে, অবৈধভাবে এদেশে রোহিঙ্গা মুসলিমদের অনুপ্রবেশ এবং তাঁদের বাস করা জাতীয় নিরপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক।

কেন্দ্র পরিষ্কার জানিয়েছে, এদেশে বসবাস করার কোনও মৌলিক অধিকার রোহিঙ্গাদের নেই। তাই তাঁদের এখানে স্থায়ী বসবাস করতে দেওয়ার প্রশ্নও উঠছে না। শুধু এটুকুই নয়, কেন্দ্র বিচারবিভাগকে জোর দিয়ে এটাও বলেছে যে, এদেশে ঢুকে পড়া রোহিঙ্গাদের উদ্বাস্তু মর্যাদা প্রদানের জন্য কোনও ভাবেই নীতি নির্ধারক কমিটি অথবা আইনবিভাগকে নির্দেশ দেওয়াও উচিত হবে না।

এছাড়াও কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রোহিঙ্গা মুসলিমদের শরণার্থী অথবা উদ্বাস্তু হিসেবে স্বীকৃতির জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের যে প্রস্তাব আছে, ভারত সেই নীতি মানে না। এই প্রসঙ্গে এদেশের সর্বোচ্চ আদালতের (Supreme Court) নানান রায়ের দৃষ্টান্তও তুলে ধরেছে কেন্দ্র। পাশাপাশি সংবিধানের ২১ নং ধারা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, একজন বিদেশি নাগরিকের জীবন ও স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে একথা ঠিক। তবে এদেশে স্থায়ী বসবাসের অধিকার শুধুমাত্র এদেশের নাগরিকদেরই আছে। অর্থাৎ কোনও অর্থেই অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা মুসলিমদের এদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে দেওয়া হবে না।

আরও পড়ুনঃ গার্ডেনরিচ কাউন্সিলরের ভূয়সী তারিফ! ফিরহাদের ভিডিও পোস্ট করে বিস্ফোরক শুভেন্দু অধিকারী

কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, অবৈধভাবে রোহিঙ্গা মুসলিমদের এদেশে প্রবেশ করা এবং বসবাস করার ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ, অসম সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর রোহিঙ্গা এদেশে প্রবেশ করছে, কেন্দ্রের হলফলনামায় উল্লেখ করা হয়েছে একথা। যদি এমনটাই চলতে থাকে তাহলে এদেশের সুরক্ষা প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়াবে বলে দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি এও বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই বহু রোহিঙ্গা এদেশে ঢুকে ভুয়ো পরিচয়পত্রও বানিয়ে ফেলেছেন, গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে মিলেছে এমনই খবর।

এদিকে আটক করা রোহিঙ্গাদের মুক্তির দাবি করে প্রিয়ালি সুরের আবেদনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্র জানিয়েছে, ১৯৫১ সালের শরণার্থী সংক্রান্ত সম্মেলনে এদেশ সই করেনি। তাই যারা এদেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে বিদেশি অনুপ্রবেশ দমন সংক্রান্ত আইনেই মামলা করা হবে। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা ও তিব্বত থেকে আসা শরণার্থীদের মতো ব্যবহারের আর্জিও খারিজ করে কেন্দ্রের তরফ থেকে বলা হয়েছে, কাদের শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া হবে এবং কাদের নয় সেটা একেবারেই নীতিগত সিদ্ধান্ত।

rohingya muslims

আইনসভার বাইরে অনুপ্রবেশকারী ও শরণার্থীর বিভাজনের স্বীকৃতি/অস্বীকৃতি বিচারবিভাগের নির্দেশের ওপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। পাশাপাশি সংবিধানে উল্লিখিত সমতা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী কিংবা বিদেশিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বলেও দাবি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে, রোহিঙ্গা মুসলিমদের এদেশে থাকতে না দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্র যে একপ্রকার অনড় তা হলফনামা থেকেই স্পষ্ট।


Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর