বাংলা হান্ট ডেস্ক : আর্থিক সংকটে জেরবার পাকিস্তান (Pakistan)। মুদ্রাস্ফীতির জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে সেদেশের অর্থনীতি। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে মুদ্রাস্ফীতি পৌঁছেছে ৪০ শতাংশের উপরে। যা গত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। শেষবার ১৯৭৫ সালের মে মাসে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পাকিস্তানে (Inflation in Pakistan)। স্বাভাবিক ভাবেই এমন অবস্থায় নাভিশ্বাস আমজনতার।
এদিকে এই মুহূর্তে এই আর্থিক সংকট থেকে বাঁচতে পাকিস্তানের একমাত্র ভরসা আইএমএফ। গতবছরও মোটা অঙ্কের ঋণ দিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার পাকিস্তানকে দুরবস্থা থেকে বাঁচিয়ে তুলেছিল। কিন্তু এবছর সেটাও সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে ইতিমধ্যেই ঋণ সংক্রান্ত জরুরি আলোচনা করতে সেদেশে এসেছে প্রতিনিধি দল। সাড়ে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পেতে মরিয়া ইসলামাবাদ। কিন্তু এই ঋণ নিতে প্রচুর শর্ত চাপিয়েছে আইএমএফ।
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে করাচি বন্দরে থমকে রয়েছে বহু কন্টেনার। কেননা আমদানি বন্ধ রয়েছে সেখানে। থমকে গিয়েছে বহু নির্মাণকাজ। কারখানাগুলিও আংশিক ভাবে বন্ধ। এমন অবস্থায় দু’বেলা দু’মুঠো জোগাড় করাই যেন চ্যালেঞ্জ। ভিখারির সংখ্যা বাড়ছে। কমছে শ্রমিকের সংখ্যা। মুদ্রাস্ফীতি এতটাই বেড়ে গিয়েছে, যে ঠিকঠাক উপার্জন করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, মুদ্রাস্ফীতি, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। ফলে রান্নার গ্যাস, ভোজ্য তেল অমিল ইসলামাবাদে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন-এ প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, সে দেশে পাম তেল, সয়াবিনের তেল ও সানফ্লাওয়ার তেলের জোগানে ঘাটনি দেখা দিয়েছে। মিলছে না রান্নার তেলও। ব্যবসায়ীদের কাছে মজুত তেলভাণ্ডারেও টান পড়ছে। অথচ এগুলি সে দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের তালিকায় নাম রয়েছে এই তিন তেলের।
পাকিস্তানে এখন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে মাইনেবাঁধা কর্মজীবী — সব ধরনের মানুষই দুটো চাকরি করেও ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা উচ্চবিত্ত মানুষ — যারা আগে চার চাকার গাড়ি ব্যবহার করতেন তারা এখন মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। অনেক মা-বাবা তাদের সন্তানদের আগের স্কুল থেকে ছাড়িয়ে এনে কম বেতনের স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন। গত দেড় বছরে দেশটিতে বিদ্যুতের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। মাসিক মাইনের কর্মজীবীদের অনেকের বছরের পর বছর বেতন বাড়েনি।