আগামী দেড় বছরে ১০ লক্ষ নিয়োগ, দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

বাংলাহান্ট ডেস্ক : যেভাবে দেশে দিনের পর দিন মূল্যবৃদ্ধি, ও বেকারত্বের চাপ বাড়ছে। তার ফলে ধুঁকছে দেশের অর্থনীতি। এবার সেই পরিস্থিতির মধ্যেই বড় ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর। কেন্দ্রীয় সরকার আগামী দেড় বছরে ১০ লক্ষ নিয়োগ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অতি তৎপরতার সঙ্গে নিয়োগকার্য শুরু করতে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

পিএমও ইন্ডিয়ার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সমস্ত মন্ত্রক ও বিভাগে মানবসম্পদ পর্যালোচনা করেছেন। পাশাপাশি আগামী দেড় বছরে ১০ লাখ নিয়োগ মিশন মোডে করার নির্দেশ দিয়েছেন। সব বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, কারণ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্পষ্ট যে নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে।কর্মসংস্থান ইস্যুতে প্রায়ই বিরোধী দলগুলির প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়া মোদী সরকার উত্তর দেওয়ার পরিকল্পনা তৈরি করেছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের বিভাগ এবং মন্ত্রকগুলিতে শূন্য পদগুলি পূরণ করতে, প্রধানমন্ত্রী মোদী মিশন মোডে একটি নিয়োগ অভিযান পরিচালনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া তথ্য অনুসারে, কেন্দ্রীয় সরকার আগামী দেড় বছরে তার বিভিন্ন বিভাগে ১০ লক্ষ নিয়োগ করবে। পিএমও ইন্ডিয়ার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সমস্ত মন্ত্রক ও বিভাগে মানবসম্পদ পর্যালোচনা করেছেন। সেই সঙ্গে আগামী দেড় বছরে ১০ লাখ নিয়োগ মিশন মোডে করার নির্দেশ দিয়েছেন ।

২০২০ সালেই কেন্দ্রে ৯ লাখ সরকারি পদ খালি ছিল
কেন্দ্রীয় কর্মী ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রী, ডঃ জিতেন্দ্র সিং , গত বছর রাজ্যসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন যে ১ মার্চ, ২০২০ পর্যন্ত, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগে ৮.৭২ লক্ষ পদ শূন্য ছিল। আপাতত, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জিতেন্দ্র সিং বলেছিলেন যে কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত বিভাগে মোট ৪০ লাখ ৪ হাজার পদ রয়েছে, যার মধ্যে ৩১ লাখ ৩২ হাজার পদে বর্তমানে নিয়োগ করা হয়েছে। এভাবে ৮ লাখ ৭২ হাজার পদে নিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। শুধু তাই নয়, ২০১৬-১৭ থেকে ২০২০-২০২১ পর্যন্ত নিয়োগের তথ্য দেওয়ার সময়, জিতেন্দ্র সিং বলেছিলেন যে এসএসসি দ্বারা পরিচালিত পরীক্ষার মাধ্যমে ২,১৪,৬০১ জন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। এর বাইরে RRB-এর মাধ্যমে ২,০৪,৯৪৫ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যেখানে UPSC ২৫,২৬৭ প্রার্থীকে বেছে নিয়েছে।

যদিও এ নিয়ে মোদী সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা মঙ্গলবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন, এবং তিনি বলেন, “এ ৯০০ ইঁদুর খেয়ে বিড়ালের হজযাত্রা আর কী! ৫০ বযরে বেকারত্ব সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। টাকার দাম সর্বনিম্নে এসে ঠেকেছে। আর টুইটার টুইটার খেলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন প্রধানমন্ত্রী।”

সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তো বছরে ২ কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল! সেই অর্থে আট বছরে ১৬ কোটি চাকরি হয়। সেই গল্প চলে গেল। সরকারি সংস্থাগুলির এক এক করে বেসরকারিকরণ হচ্ছে। বিএসএনএল-এর মতো সংস্থাকে প্রায় তুলে দেওয়া হয়েছে। রেলের পরীক্ষা কোথায় চলে গিয়েছে। গত এক সপ্তাহেই ৭০ হাজার চাকরি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই এই দাবি কি বিশ্বাসযোগ্য আদৌ? বছরে ২ কোটি বলেছিলেন, এখন দেড় বছরে ১০ লক্ষ বলছেন। ২০২৪-এ ভোট। ধরা পড়ে যাবেন বলেই কি! ভোটের পর আবার ভুলে যাবেন আমার বিশ্বাস। বাজার গরম করার জন্য এখন এ সব বলছেন।”

বলে দিই যে, করোনা মহামারীর কারণে, গত দুই বছরে কেন্দ্রীয় সরকারী বিভাগে খুব বেশি নিয়োগ হয়নি। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই ঘোষণা তরুণদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আজ সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার কথা। মনে করা হচ্ছে, মন্ত্রিসভার বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরগুলিতে শূন্য পদগুলি পূরণের বিষয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এই বছর কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তারপরে ২০২৪ সালে সাধারণ নির্বাচন আসছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের এই বড় সিদ্ধান্তের কথা ভাবা হচ্ছে।


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর