বাংলা হান্ট ডেস্ক : গত বুধবার দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে বুধবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাওড়া (Howrah) ময়দানের ফাঁসিতলা। বুধবার গভীর রাতে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যেকার সংঘর্ষ এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, শেষমেষ ১৪৪ ধারা জারি করতে বাধ্য হয় প্রশাসন। পুলিশ সূত্রে খবর, দোকানপাটের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি দুই পক্ষের মোট ৮জন ব্যক্তি গুরুতর জখম হয়েছে। বিজেপির (BJP) তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে মুসলিম সম্প্রদায় সহ খোদ মুখ্যমন্ত্রীর উপর।
মিডিয়া সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত হয় ‘রাম মন্দির’ (Ram Mandir) উদ্বোধন উপলক্ষ্যে করা একটি মিছিলকে কেন্দ্র করে। টিকিয়াপাড়া (Tikiapara) বাজার থেকে ফাঁসিতলা পর্যন্ত এই মিটিং-এ হঠাৎ কেউ ইঁট ছোঁড়ে বলে খবর। একপক্ষ লাঠি হাতে আক্রমণ শানায় অপর পক্ষকে। এসবের মধ্যেই শুরু হয় বাকযুদ্ধ এবং তা পৌঁছে যায় হাতাহাতিতে। একটি স্থানীয় শিব মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও খবর। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, সংঘর্ষে মোট ৮ জন আহতও হয়েছেন।
পরিস্থিতি হাতের বাইরে যেতেই ঘটনাস্থলে আসে হাওড়া, শিবপুর সহ একাধিক থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। নামানো হয় র্যাফ। সূত্রের খবর, সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আহত হয়েছেন হাওড়া থানার ওসি সহ ৪ পুলিশকর্মী। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। এমনকি এই সংঘর্ষের নেপথ্যে মমতা সরকারের উস্কানি রয়েছে বলে অভিযোগ গেরুয়া বাহিনীর। সেই সাথে প্রশাসনের তরফ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে ঐ এলাকায়। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য নিজের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘গত রাতে, হাওড়া পৌরনিগমের অধীন হাওড়া বেলিলিয়াস রোডের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বড় বড় পাথর ছোড়া হয়েছিল। এটি সেই একই জায়গা যেখানে রামনবমী শোভা যাত্রাকে নিশানা করা হয়েছিল, এই এলাকা নবান্ন থেকে খুব বেশি দূরে নয়, যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বসেন৷ বিক্ষুব্ধ মুসলিম জনতা এলাকাটিকে লক্ষ্যবস্তু করে কারণ এখানকার হিন্দু জনগোষ্ঠী প্রাণপ্রতিষ্ঠা (২২শে জানুয়ারি) উদযাপন করেছিল। ওই সময় স্থানীয় একটি শিব মন্দিরও ভাঙচুর করা হয়।’
আরও পড়ুন : ভগ্ন গণেশ, হনুমানের মূর্তি থেকে শিবলিঙ্গ! জ্ঞানবাপীর নীচ থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ জোগাড় করল ASI
অমিত মালব্যর আরও সংযোজন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু সুরক্ষা দিতেই ব্যর্থ হননি, বরং সর্বধর্মসভায় তার সাম্প্রদায়িক ভাষণ হিংসাকে প্ররোচিত করেছিল। তিনি কলকাতা হাইকোর্টের আদেশের চরম লঙ্ঘন করছেন, যা মুখ্যমন্ত্রীর উপর আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব দিয়েছিল। বাংলার পুলিশ প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিতে বাধা না দিয়ে বাংলার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের সুরক্ষার দিকে মনোনিবেশ করা, এতে হিন্দুরাও অন্তর্ভুক্ত। বিজেপি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনের পদক্ষেপের সম্ভাবনা কম। সব মিলিয়ে শেখ শাহজাহান এখনও পলাতক।’