বাংলাহান্ট ডেস্ক : আজকাল অনলাইনে পণ্য কিংবা খাবার ডেলিভারির সঙ্গে আমরা সকলেই অভ্যস্ত। কিন্তু তাবলে আস্ত বোমা? ঠিক এহেন চাঞ্চল্যকর ঘটনাই ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার মূলটি এলাকায়। মঙ্গলবারই অনলাইন ওই বোমা ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর ধৃতের নাম মকবুল শেখ।
জানা যাচ্ছে, এই বোমা কেনাবেচার পুরো প্রক্রিয়াটাই চালানো হত অনলাইনে। বোমা বানানোর পর সেগুলির ছবি তুলে পাঠিয়ে দেওয়া হত গ্রাহকদের কাছে। বোমার কাজ, আকার ইত্যাদির উপর নির্ভর করত দাম। ২৫০ টাকায় বিক্রি হত সুতলি বোমা, আবার কৌটো বোমার দাম ধার্য হত ৪৫০ টাকা। বোমার ছবি দেখে গ্রাহকদের পছন্দ হলে অর্ডার করা হত অনলাইনেই। অনলাইন ব্যাঙ্কিং বা ইউপিআই এর মাধ্যমেই পাঠিয়ে দেওয়া হত টাকা। এরপর কুরিয়ার মারফত সেই বোমা পৌঁছে যেত ক্রেতার কাছে।
বহুদিন ধরেই পুলিশের কাছে বোমা কেনাবেচার অভিযোগ থাকলেও কিছুতেই তার কিনারা করা সম্ভব হচ্ছিল না। শেষমেশ বোমা ব্যবসায়ীর বাড়িতেই অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে শৌচাগারের ছাদ থেকে উদ্ধার করা হয় বিভিন্ন ধরনের একাধিক বোমা। ডাকা হয় বম্ব স্কোয়াডকেও। এরপর অভিযুক্তের মোবাইলে তল্লাশি চালাতেই মেলে আসল রহস্যের সমাধান। সেখান থেকেই পাওয়া যায় এই অনলাইন বোমা কারবারের কিনারা। পুরো ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। কারা এই বোমা কিনত বর্তমানে সেই রহস্যেরই খোঁজ চলছে।
এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সলিল ভট্টাচার্য বলেন, ‘আর সত্যিই বলার কিছু নেই। বোমা অফুরন্ত। নতুন নতুন ঘটনা ঘটছে। বোমা তৈরি, অস্ত্র ব্যবসা, এখন কুটির শিল্প হয়ে গিয়েছে’। বলাই বাহুল্য এহেন ইস্যুতে চুপ নেই বিজেপিও। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ‘এর চেয়ে চমৎকৃত খবর সারা বিশ্বে হয়েছে কিনা জানি না। দুয়ারে রেশন, দুয়ারে সরকারের পর দুয়ারে বোমও পৌঁছে যাচ্ছে।’ যদিও এর প্রেক্ষিতে জয়প্রকাশ মজুমদারের পালটা সাফাই ‘পুলিশ কাজ করছে বলেই এগুলো উদ্ধার হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী হিংসা দূর করার কথা বলছেন। বিজেপির কতটা ইন্ধন রয়েছে দেখতে হবে।’ সব মিলিয়ে এই বোমা উদ্ধারের ঘটনায় যে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরফা তা বলাই বাহুল্য।