বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি, এসএসসি (SSC) দুর্নীতি মামলায় ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে ১০ দিনের ইডি হেফাজতে রয়েছেন তারা। গতকাল ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ এবং আগামী দিনগুলিতেও একাধিক প্রশ্নের জবাব চাওয়া হবে বলে ইডি সূত্রে খবর। একইসঙ্গে পার্থ এবং অর্পিতাকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সম্ভাবনাও ক্রমশ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। তবে সূত্রের খবর, ইডির অস্থায়ী লকআপে বিন্দুমাত্র স্বাচ্ছন্দ্যে নেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
ইডি জিজ্ঞাসাবাদের মাঝে কোনওমতে খেয়ে এবং শুয়ে দিন কাটছে পার্থের। উল্লেখ্য, সিজিও কমপ্লেক্সের কনফারেন্স রুমে একটি অস্থায়ী লকআপে রাখা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। অপরদিকে, স্থায়ী কমন লকআপে রয়েছেন পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা। ইডি সূত্রে খবর, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে একটি বিছানা, পাখা এবং কাঠের চেয়ার ছাড়া আর কিছুই নেই। এমনকি বাথরুম করতে গেলেও অন্যত্র যেতে হচ্ছে, নিতে হচ্ছে নিরাপত্তারক্ষীদের সহায়তা। তবে এক্ষেত্রে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ঘরে চারটি বিছানার পাশাপাশি অ্যাটাচ টয়লেট রয়েছে বলে খবর।
গতকাল এসএসসি মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক প্রশ্নের মুখোমুখি হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে বাকি সময়টা তিনি শুয়ে বসেই কাটিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। মাঝে খেয়েছেন সামান্য কিছু খাবার এবং গ্রিন টি। ফলে মন্ত্রীমশাই যে বিন্দুমাত্র স্বাচ্ছন্দ্যে নেই, তা স্পষ্ট। ইডি সূত্রে খবর, এসএসসি মামলায় দুর্নীতি প্রসঙ্গে এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে মুখ খোলেননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় সহায়তা করলেও তৃণমূল নেতার তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত বিশেষ সহায়তা মেলেনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে ২১ কোটি অর্থ, একাধিক সোনা গয়না, মোবাইল ফোন এবং বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে ইডি। তবে ইডির মতে, “এটি কেবলমাত্র সূচনা মাত্র। এক্ষেত্রে মোট ১২০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।” গতকাল আদালতের সামনে ইডি আইনজীবী বলেন, “একটি পেঁয়াজ মাত্র পাওয়া গিয়েছে। তবে এর খোসা ছাড়ানোর পর আরও বেশি তথ্য সামনে উঠে আসবে। এই মুহূর্তে আরো ১০০ কোটি টাকা উদ্ধারের দিকে নজর রয়েছে আমাদের।”
আদালতে শুনানি চলাকালীন ইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়, “তৃণমূল কংগ্রেস মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে প্রাথমিক শিক্ষক এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের একাধিক নথি এবং তথ্য উদ্ধার করা গিয়েছে। আমাদের অনুমান, গ্রুপ ডি এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগেও জড়িত রয়েছেন তিনি। এছাড়াও পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মিলে যৌথভাবে একাধিক সম্পত্তি কিনেছিলেন।” এক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ এবং সুসম্পর্ক না থাকলে এত সম্পত্তি কেনা যায় না বলে দাবি করেন তিনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আগামী দিনে পার্থ-অর্পিতাকে সামনাসামনি জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে একাধিক নয়া তথ্য উঠে আসবে বলেই মনে করছে ইডি।