বাংলাহান্ট ডেস্ক : পেটের জ্বালা, বড় জ্বালা। এই জ্বালা মেটাতে ৯৫ বছর বয়সেও এক বৃদ্ধাকে বিক্রি করতে হচ্ছে ফুচকা। দুর্বল শরীরের জন্য নিচু হয়ে ফুচকা ভাজতে পারেন না। তবে পেট চালানোর জন্য টাকা তো দরকার! তাই ৯৫ বছর বয়সে দুর্বল শরীর নিয়েই চলছে ফুচকা বিক্রি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন রীতিমত ভাইরাল মধ্যমগ্রামের পুষ্প মণ্ডল।
বাংলাদেশে পুষ্পর আদি বাড়ি। জানা যায় সেখানে পুষ্প মণ্ডলের স্বামীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। প্রাণ বাঁচাতে পুষ্প চলে আসেন এপার বাংলায়। তারপর কেটে গেছে বহু যুগ। গঙ্গা ও পদ্মা দিয়ে বয়ে গেছে বহু জল। বহু কাল ধরে এবার বাংলায় থাকলেও স্থায়ী বাসস্থান নেই পুষ্প মণ্ডলের। রেল পাড়ের জমিতে অস্থায়ীভাবে তৈরি ছাউনিতেই কাটে জীবন।
আরোও পড়ুন : LIC প্রিমিয়াম সময়মতো জমা দিতে পারছেন না ? জানুন, ঠিক কী কী হতে পারে আপনার সাথে…
৯৫ বছর বয়সে এসেও অসমর্থ্য শরীর নিয়ে দিনরাত এক করে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন পুষ্প। মধ্যমগ্রাম স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের টিকিট কাউন্টারের কাছের মাঠে বিকেলের পর ফুচকা বিক্রি করতে আসেন পুষ্প। পুষ্প নিজেই তৈরি করেন ফুচকা। গ্রাহকের চাহিদা মতো মশলা ও তেঁতুল জল দিয়ে ফুচকা মেখে তুলে দেন তাদের হাতে।
আরোও পড়ুন : চাইলেই পাবেন ৫০ হাজার টাকা! সুবর্ণ সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার, কীভাবে করবেন আবেদন?
এক মেয়ে রয়েছে পুষ্প মণ্ডলের। ফুচকা বিক্রি করে বিয়ে দিয়েছেন মেয়ের। মেয়ে বর্তমানে শিলিগুড়িতে থাকে। তবে এই বৃদ্ধা মেয়ের সংসারে বোঝা হতে চান না। তাই নিজের ভাত জোগাড় করতে এই বয়সেও অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। পুষ্প জানিয়েছেন, আগে ভালো বিক্রি হলেও এখন কম বিক্রি হচ্ছে।
১০০, ২০০ যে সামান্য টাকা রোজগার হয়, তা দিয়েই চলে জীবন। পুষ্প রাত্রে থাকেন মধ্যমগ্রাম (Madhyamgram) স্টেশন সংলগ্ন সুভাষপল্লী কোয়ার্টারের পিছনের একটি অস্থায়ী ঘরে। অধিকাংশ দিন ছোলা আর ছাতু খেয়ে দিন কাটে। কখনো কখনো দুপুরে জুটে যায় মাছের ঝোল আর ভাত।
৯৫ বছর বয়সে স্বাভাবিক নিয়ম মেনে অসামর্থ্য হয়ে পড়েছে শরীর। চোখে-মুখে স্পষ্ট ক্লান্তির ছাপ। তবুও এই বয়সে নিজেই ফুচকার গাড়ি ঠেলে নিয়ে আসেন। গ্রাহকদের চাহিদা মতো মুখরোচক ফুচকা তৈরি করে দেন। রাত আটটা-সাড়ে আটটা পর্যন্ত চলে দোকানদারি। তারপর ফিরে যান বাড়ি। সব মিলিয়ে তিনি যেন এক অনুপ্রেরণার গল্প বলেন।