বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের বিধানসভা নির্বাচন মোটেই তেমন ভালো যায়নি ভারতীয় জনতা পার্টির জন্য। অসম এবং পুদুচেরিতে সরকার গড়লেও কেরল, তামিলনাড়ু এবং বাংলায় বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে তারা। বিশেষত বাংলায় সমস্ত শক্তি কেন্দ্রীভূত করার পরেও মাত্র ৭৭ টি আসন নিয়েই থামতে হয়েছে বিজেপিকে। এদিন নিজের বাড়িতে বিজেপির এ ধরনের পরাজয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী। দলের সমস্ত সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে একুশের বিভিন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পারফরম্যান্স সম্পর্কে বৈঠক করেন তিনি।
এদিন প্রত্যেকটি বিধানসভা নির্বাচনকে নিয়ে আলাদা করে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপি নেতৃত্বকে বেশ কিছু পরামর্শও দেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বিজেপি কর্মীদের অবশ্যই দেখতে হবে কিভাবে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এত খারাপ ফল করার পরেও তৃণমূল এত বড় একটি জয়ে ফিরল। যখন ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৪২ টি আসনের মধ্যে ১৮ টি দখল করেছিল বিজেপি।”
সঙ্গে সঙ্গে তিনি এও বলেন, “জয় এবং পরাজয়ে যাই হোক একইভাবে বিজেপিকে নিজেদের পারফরম্যান্স বিচার করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে নির্বাচনগুলোর ক্ষেত্রে প্রস্তুত হওয়া যায়।” সমস্ত আঞ্চলিক ভাষার উপর বিজেপি কর্মীদের দখল থাকার ওপর জোর দেন তিনি। তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়াকে আরো ভালো করে ব্যবহার করার জন্য বিজেপি কর্মীদের আঞ্চলিক ভাষার ওপর আরো দক্ষতা থাকা দরকার।”
সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই বৈঠকে বাংলা নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়েও আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। কেরালার কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, কেরালায় পার্টিকে আরো বেশি খোলামেলা হতে হবে। বিশেষত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের সাথে আরো বেশি করে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। তিনি এও বলেন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানো কোন বড় ব্যাপার নয়। তাই এ বিষয়ে আরও মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে তেমন ভাবে মাঠে-ময়দানে দেখা যায়নি বিজেপি কার্যকর্তাদের। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই নিয়েও বারবার সমালোচিত হতে হয়েছে সরকারকে। সেই কারণেই এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি। জানানো হয়েছে তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য অগ্রিম প্রস্তুতি নিতে প্রায় এক লক্ষেরও বেশি কর্মীকে গোটা দেশজুড়ে স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে “সেবাই সংগঠন” প্রকল্প। কেন্দ্রীয় সরকারের সপ্তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এর আগেই মাঠে ময়দানে নেমে আর্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছেন বিজেপি কর্মীরা। আগামী দিনেও প্রায় ১ লক্ষ ৭১ হাজার গ্রাম এবং ৬০ হাজার শহরে ত্রাণ ও প্রয়োজনীয় ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সোমবারের বৈঠকে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই বৈঠকের ঠিক আগেই বিভিন্ন মোর্চার সম্পাদকদের নিয়ে নিজের বাড়িতে একটি বৈঠক করেন বিজেপির সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং পার্টির(সংগঠন) সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষ। এই বৈঠকেও আগামী দিনের রণনীতি সম্পর্কে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন নিয়ে শনিবারই বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এরপর রবিবার একটি বৈঠক করে রাজ্য বিজেপিও।