বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় ইডির (Enforcement Directorate) হাতে গ্রেফতার মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। মানিকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত আর এবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতির বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল তদন্তকারী সংস্থা। এক্ষেত্রে মানিককে দুর্নীতির ‘কিংপিন’ দাবি করার পাশাপাশি ইডির অভিযোগ, “মানিক ভট্টাচার্যের আমলে ৫৮ হাজার চাকরি বেআইনিভাবে দেওয়া হয়েছে।” এক্ষেত্রে গত জুলাই মাসে তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নথির মধ্যে সেই সকল প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার।
শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় অতীতেই গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। পাশাপাশি বর্তমানে একাধিক শিক্ষা আধিকারিকরা হেফাজতে। এই পরিস্থিতিতে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে মানিক ভট্টাচার্যের ওপর নজর থাকলেও আদালতের নির্দেশে গ্রেফতার করা যায়নি তাঁকে। অবশেষে গত সোমবার রাতে দীর্ঘ জেরা শেষে গ্রেফতার করা হয় শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ককে। গতকাল আদালতের নির্দেশে দুই সপ্তাহের ইডি হেফাজত হয়েছে মানিকবাবুর।
সূত্রের খবর, গতকাল থেকে একাধিক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ে চলেছে মানিককে। উল্লেখ্য, তৃণমূল বিধায়কের গ্রেফতারির পর থেকে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসে চলেছে। এক্ষেত্রে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সূত্র মিলেছে তদন্তকারী অফিসারদের হাতে। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের নিকট উপস্থিত হলেও এক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শীর্ষ আদালত।
এই পরিস্থিতিতে মানিকের অস্বস্তি আরো বাড়িয়ে ইডির দাবি, “ক্ষমতা অপপ্রয়োগের মাধ্যমে মানিক ভট্টাচার্যের আমলে ৫৮ হাজার চাকরি বেআইনিভাবে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগসূত্র এবং অন্যান্য একাধিক বেআইনি উপায়ে নিয়োগ দুর্নীতিকে বাস্তব রূপ দেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গতকাল আদালতে ইডির আইনজীবী দাবি করেন, “মানিক ভট্টাচার্যের বাড়ি থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে লেখা একটি চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে। যেখানে অভিযোগ করা হয় যে, মোট ৪৪ জনের থেকে ৭ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।” অর্থাৎ তিন কোটির ওপর টাকা দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে চিঠি লেখা হলে তা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের বাড়িতে কিভাবে পৌঁছালো?
একইসঙ্গে মানিক-পুত্র শৌভিক ভট্টাচার্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা মিলেছে বলে দাবি ইডির আর এবার ৫৮ হাজার চাকরি দুর্নীতির অভিযোগে অস্বস্তি আরো বৃদ্ধি পেল মানিকের।