বাংলাহান্ট ডেস্ক: কে বলে রাজনীতি খুব কাঠখোট্টা ব্যাপার? এই জগতেও এমন অনেক মধুর প্রেমকাহিনি রয়েছে যা হার মানাবে সিনেমাকেও। এমনি এক প্রেমকাহিনি প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী (Rajiv Gandhi) এবং সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi)। ইতালীয় বংশোদ্ভূত সোনিয়ার প্রেমে পড়ে তাঁর সঙ্গে সারা জীবন কাটানোর অঙ্গীকার করেন ইন্দিরা গান্ধী পুত্র। অন্যদিকে ভালবাসার টানে ভিন্ন সংষ্কৃতি, ভিন্ন ভাষাভাষীর দেশে চলে আসেন সোনিয়া।
না, তাঁরা যেমনটা ভেবেছিলেন তেমনটা হয়নি অবশ্য। খুব কম সময়ই রাজীবকে পাশে পেয়েছিলেন সোনিয়া। স্বামীর মৃত্যুর পর ভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু দুজনের প্রেমের সূত্রপাত হয় কীভাবে? সোনিয়া রাজীবের প্রথম সাক্ষাৎই বা কোথায়?
জানা যায়, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রিক রেস্তোরাঁয় প্রথম দেখা হয়েছিল সোনিয়া এবং রাজীবের। সে সময়ে কেমব্রিজে পড়াশোনা করতেন ইন্দিরা পুত্র। এক রেস্তোরাঁয় প্রথম সোনিয়াকে দেখেছিলেন তিনি। প্রথম দেখাতেই তাঁকে পছন্দ হয়ে যায় রাজীব গান্ধীর। হোটেল মালিককে দিয়ে একটি ন্যাপকিনে কবিতা লিখে এবং একটি ওয়াইনের বোতল পাঠিয়েছিলেন সোনিয়াকে।
দুজনের সম্পর্ক শুরু হতে বেশি সময় লাগেনি। নিজের মা ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গেও সোনিয়ার আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। হবু বউমাকে পছন্দও হয়ে গিয়েছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। তবে তিনি চেয়েছিলেন যে সোনিয়া আগে ভারতে এসে দেখে যান যে তিনি কোথায় এসে থাকবেন বাকি জীবনটা। তবে প্রথমটা সোনিয়ার বাবা বেঁকে বসেছিলেন। মেয়ে এক রাজনৈতিক পরিবারের বধূ হবে এটা মানতে পারেননি তিনি।
রাজীব সোনিয়া অবশ্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন, একে অপরের সঙ্গেই থাকবেন তাঁরা। পড়াশোনা মাঝপথেই ছেড়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন রাজীব গান্ধী। তাঁর কিছুদিন পর চলে আসেন সোনিয়াও। তাঁদের বিয়েটাও ছিল এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। নয়া দিল্লিতে বচ্চন হাউসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল কিছু প্রি ওয়েডিং অনুষ্ঠান। ১৯৬৮-র ফেব্রুয়ারিতে চার হাত এক হয় রাজীব এবং সোনিয়ার।
সোনিয়ার উপরে মুগ্ধ ছিলেন রাজীব। বহুবার সর্বসমক্ষে স্ত্রীর প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সোনিয়াই তাঁর চোখে সবথেকে বেশি সুন্দরী, এমনটা অনেকবার বলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি এও বলতেন, সোনিয়া কখনোই তাঁর কাছ থেকে কিছু লোকাননি। ১৯৯১ সালে আসে সেই মর্মান্তিক দিন। বোমা বিষ্ফোরণে নিহত হন রাজীব গান্ধী। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর ছোট ছোট দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে নিজের দেশে ফিরে যাননি সোনিয়া। বরং থেকে গিয়েছেন ভারতেই, সামলেছেন রাজনৈতিক দায়িত্ব।