বাংলাহান্ট ডেস্ক: কেকে (KK) চলে গেলেন। কিন্তু জীবিতাবস্থাতেও জানতে পারেননি কত বড় বিতর্কে জড়িয়ে গেল তাঁর নাম। বলিউডের গায়ককে নিয়ে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন রূপঙ্কর বাগচী (Rupankar Bagchi)। তিনি এবং আরো কয়েকজন বাঙালি শিল্পী যেকোনো কেকের থেকে ভাল গান, এমনটাই দাবি করেছিলেন। বাঙালি শ্রোতাদের ‘চেতনা’ ফেরানোর উদ্দেশে। কিন্তু সেটা যে ব্যুমেরাং হয়ে এমন বিপদে পড়তে হবে তা ভাবতেও পারেননি রূপঙ্কর।
যে গায়কের থেকে নিজে ভাল গান বলে দাবি করেছিলেন রূপঙ্কর, তিনিই মারা গেলেন সেদিন। তাও আবার নিজের শহর কলকাতায়। ধিকিধিকি ক্ষোভের আগুন পরিণত হল দাবানলে, যার আঁচ শুধু রূপঙ্কর নয়, লেগেছিল তাঁর গোটা পরিবারের উপরে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র কটুক্তি, কেরিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার অভিশাপ, বয়কট করার হুমকি দিয়েও শান্তি হয়নি নেটনাগরিকদের একাংশের।
ফোনে এসেছে খুনের হুমকি, সঙ্গে স্ত্রী সন্তানের উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্য। অবশেষে শুক্রবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে নিঃশর্ত ক্ষমা চান রূপঙ্কর। মুছে দেন বিতর্কিত ভিডিও। তারপরেই মুখ খুললেন জাতীয় পুরস্কারজয়ী গায়কের স্ত্রী চৈতালি লাহিড়ী (Chaitali Lahiri)। এই কদিন যে বিভীষিকার মধ্যে দিয়ে কেটেছে তাঁর পরিবারের, সেটাই একটি লম্বা চওড়া কবিতার আকারে তুলে ধরেছেন তিনি।
‘স্যোশাল মিডিয়া তোমার দেওয়া আ্যড্রনালিন রাশ, ছোট্ট পরিবারের জীবনে নামিয়ে এনেছে ত্রাস। দরকার একটা স্মার্টফোন আর মনে একরাশ ঘৃণা, জীবনের যত না পাওয়ার যন্ত্রণা আর কিছু বাহানা। তারপর একটা লম্বা ট্রীপ এমন নেশা কোনো মাদকেই হয়না, উত্তেজনা উত্তেজনা— উফফ দাদা জীবনে কী পাবোনা ভুলেছি সে ভাবনা।’ প্রতি লাইনে হতাশা আর কটাক্ষ রূপঙ্কর-জায়ার।
রূপঙ্করকে উদ্দেশ্য করে নিন্দুকদের প্রতি চৈতালির ব্যঙ্গ, ‘ধরফরিয়ে বুকটা পোড়ে, বরটা বড়ই বোকা, দুনিয়াদারিতে নেহাত কাঁচা শিল্প যাপনে মগ্ন থাকা। এমন কথা কি বলতে হয়, তুমি কি সমাজের হোতা? কে দিয়েছে মাথার দিব্যি? কেন নড়ল মাথার পোকা?’
চৈতালির পরামর্শ, নিজের আখের গোছানোই ভাল। একবারও স্ত্রীর কথা ভাবলেন না রূপঙ্কর? অন্তত ছোট মেয়েটার কথা তো ভাববেন। তবে চৈতালির বক্তব্য, এক দিয়ে ভালোই হয়েছে। কে প্রকৃত বন্ধু সেটা এই কঠিন সময়ে বুঝে গিয়েছেন রূপঙ্কর। সেই সঙ্গে যারা এই কদিন দাঁত নখ বের করে এনেছিলেন, তাদের প্রতি গায়কের স্ত্রীর প্রশ্ন, তাদের বাড়িতেও তো মা বোন রয়েছে। এমন অশ্লীল হুমকি, কটুক্তি তাদের কেমন লাগবে?