বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বহু টানাপোড়েনের পর আদালতের নির্দেশ মাথায় রেখে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে এসএসসি। এদিকে ইতিমধ্যেই সেই নতুন নিয়োগ বিধির পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) দায়ের হয়েছে মামলা। অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের বিধি না মেনে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে এসএসসি (School Service Commission)। তবে সেই মামলা (SSC Recruitment Case) শুনলই না হাইকোর্ট। এখনই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা হবে না বলে স্পষ্ট জানাল উচ্চ আদালত।
এসএসসি মামলায় কী নির্দেশ হাইকোর্টের? SSC Recruitment Case
এদিন বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যর এজলাসে মামলা উঠলে তিনি জানান, এসএসসির নতুন বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত বিষয়ে এখনই হস্তক্ষেপ নয়। আপাতত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক ভাবেই চলবে বলে জানায় হাইকোর্ট। তবে ফের যদিও এই নিয়ে কোনও অসুবিধা বা সমস্যা তৈরি হলে তখন আদালত হস্তক্ষেপ করবে। অন্যথায় আগামী জুলাই মাসে হাইকোর্ট মামলা শুনবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম হাই কোর্টে বলেন, ”২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এসএসসি-র নতুন বিজ্ঞপ্তিতে অনেক বিধিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যা ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির অনুরূপ নয়।” নতুন এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়ম বদল হলে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের জন্য সুযোগ আরও কমবে বলে আদালতে জানান তিনি। তবে এখনই আদালত এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে রাজি হয়নি।
প্রসঙ্গত, এসএসসির (School Service Commission) শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার নতুন বিধি প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে, নম্বর বিভাজনে বেশ কিছু বদল আনা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে যেমন নম্বর বাড়ানো হয়েছে, তেমনই শিক্ষকতার পূর্ব অভিজ্ঞতা ও চাকরিপ্রার্থীর ক্লাস নেওয়ার দক্ষতার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারির হিসেবে ৪০ বছর বয়স অবধি চাকরির জন্য আবেদন জানাতে পারবেন প্রার্থীরা। তফশিলি জাতি, জনজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির প্রার্থীদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Government of West Bengal) নিয়ম অনুযায়ী বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় ছাড় দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মুকুটে জুড়ল নতুন পালক, অবসর গ্রহণের পর এবার বিরাট দায়িত্ব পেলেন প্রাক্তন CJI ডিওয়াই চন্দ্রচূড়
আগে ৫৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হতো, তবে এবার সেটি বাড়িয়ে ৬০ করা হয়েছে। শিক্ষাগত যোগ্যতার ওপর আগে সর্বাধিক ৩৫ নম্বর ছিল, এখন তা কমিয়ে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর করা হয়েছে। তবে ইন্টারভিউয়ের নম্বরে কোনো বদল না এনে সর্বাধিক ১০-ই রাখা হয়েছে।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/YuScrPMJpmE?si=ucS36S4221lrkAAC
নতুন কিছু বিষয় যুক্ত হয়েছে। যেমন শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার ওপর সর্বাধিক ১০ নম্বর ও ‘লেকচার ডেমোস্ট্রেশন’এর জন্য সর্বাধিক ১০ নম্বর দেওয়া হবে।
নতুন বিধি অনুযায়ী, প্রথম কাউন্সেলিংয়ের পর থেকে ১ বছর অবধি প্যানেল ও ওয়েটিং লিস্টের মেয়াদ থাকবে। তবে কমিশন চাইলে রাজ্যের আগাম অনুমতি নিয়ে সেই সময়সীমা আরও ৬ মাস পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
একাধিক বদলের ফলে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা, যারা ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন, তারা আরও সমস্যায় পড়বেন বলে আশঙ্কা করে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানান মামলাকারীরা। তবে সেই মামলা দ্রুত শুনতে নারাজ হাই কোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশের ফলে আপাতত স্বস্তিতে রাজ্য সরকার।