বাংলা হান্ট ডেস্ক: টানা বৃষ্টির জেরে চলতি বছরে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বের রাজ্য আসাম। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, ইতিমধ্যেই প্রায় ৬৬ হাজার ৬৭১ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সেখানে। এমনকি, ৩৯৯ টি গ্রাম সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। অসমের কাছার জেলার পরিস্থিতিও অত্যন্ত সঙ্কটজনক। সেখানে ৪১ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এদিকে, যেদিকেই চোখ যাচ্ছে সেদিকেই শুধু কাদা জলের স্রোত পরিলক্ষিত হচ্ছে আসামে। এমনকি, ট্রেনগুলিও রীতিমত খেলনা গাড়ির মত জলে ভেসে রয়েছে। কাদা জলের স্রোতে প্রায় ডুবন্ত অবস্থায় রয়েছে ট্রেনের কামরা। এমতাবস্থায়, নিউ হাফলঙে কয়েকদিনের টানা বর্ষণে রেললাইনে ধসের জেরে ট্রেনের মধ্যেই আটকে পড়েছিলেন প্রায় ২৮০০ যাত্রী। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় বায়ুসেনার কপ্টারে করে তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে যে, দিমা হাসাও জেলায় লুমডিং শাখায় দু’টি ট্রেন আটকে পড়েছিল। এদিকে, ওই দু’টি ট্রেনের মধ্যে আটকা পড়েছিলেন বেশ কয়েকজন যাত্রী। এহেন প্রাকৃতিক দুর্যোগে কার্যত ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হন তাঁরা। যদিও, শেষমেশ তাঁদের উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি, টানা বৃষ্টিতে ধসের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেললাইনও। এমতাবস্থায়, ২৫ জোড়া ট্রেন বাতিল করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। মূলত, দিমা হাসাও এলাকায় ঘটা ভূমিধসের কারণেই দক্ষিণ আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরামে চলাচলকারী ওই ট্রেনগুলিকে বাতিল করেছে Northeast Frontier Railway।
কোন কোন ট্রেন বাতিল হয়েছে:
এই বন্যা পরিস্থিতির জেরে যে সমস্ত ট্রেনগুলি বাতিল ও আংশিক বাতিল করা হয়েছে সেগুলির মধ্যে রয়েছে আগরতলা–আনন্দ বিহার তেজস রাজধানী এক্সপ্রেস, আগরতলা–সেকেন্দ্রাবাদ এক্সপ্রেস, ব্যাঙ্গালোর ক্যান্ট-আগরতলা এক্সপ্রেস, শিয়ালদা-আগরতলা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস।
এদিকে, এই ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে অসমে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। পাশাপাশি, বেশ কয়েকজন নিখোঁজ বলেও জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায়, আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। এদিকে, ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির জেরে নগাঁওয়ে বাড়িতে আটকে পড়া ৭০-৮০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে নগাঁওয়ের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ”এই ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেল। আমরা সকলেই অত্যন্ত বিপর্যস্ত। বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। অনেকেই আবার রাস্তাতেও আশ্রয় নিয়েছেন।”