বাংলাহান্ট ডেস্কঃ সাতের সাথী। চারিদিকে চাল ডাল বিতরণ। তবু এই সাতটি অনাথ বাচ্চার মুখে খাবার জোটানো মুশকিল । মুকুন্দপুর অনাথ আশ্রমের সকলেই যে যার বাড়ি ফিরে গেছে। ঘর নেই কেউ নেই তাই এরা সাতজন লকডাউনেও আশ্রমের ঘরবন্দি। তামান্না, পিঙ্কি, আশা – কারোও বয়স আট, কারোও নয়। কোনও সরকারি সাহায্য নেই। চেয়েচিন্তে চলে। লকডাউনের (lockdown) বাজারে হাজার দান হচ্ছে। কিন্তু ওদের তাও জোটে না। যে দিদি দেখেন তাঁর মাথায় হাত! চলবে কী করে। এক শুভাকাঙ্খী রেশন ডিলারদের সংগঠনের সম্পাদককে বলতেই এগিয়ে আসেন তিনি। নিজের উদ্যোগে ওদের চাল ডালের ভার নিলেন বিশ্বম্ভরবাবু (Vishwambharbabu)। যতদিন না লকডাউন ওঠে।
অনাথআশ্রমে আশ্রয় হলেও অনেকের বাড়ির ঠিকানা থাকে। যাদের আছে তারা ফিরে গেছে বাড়ি। যাদের নেই, তাদের তো এটাই সম্বল। রোজই দিদির নিজের বাড়িতেই ওদের থাকা খাওয়া। ওরা থাকে ওপরে আর নিচের তলায় দিদি তার এক সন্তান আর স্বামী। অবশ্য ওপর নিচে ফারাক নেই কোনও। একটাই সংসার। এই সাতজনের কেউ পড়ে ছিল ফুটপাথে, কেউ আস্তাকুড়ে, ঠিকানাহীন শিশুদের নিয়ে নিজের সন্তানের মত রেখেছেন এই ‘দিদি’। ওরা এখন স্কুলেও পড়ছে। কিন্তু এমন সময় তো আগে আসেনি কখনও।
“এতদিন যা হোক জুটে যেত। কিন্তু লকডাউন আমার বাচ্চাগুলোর মুখে কী তুলে দেবো । কোনও সরকারি সাহায্য পাইনি। চারিদিকে এতো বিতরণ। কিন্তু সাতজনের কথা শুনলেই পিছিয়ে গেছে সবাই। তাছাড়া ওদের বাইরে বের করে লাইনে দাঁড় করানোর কথা ভাবতেও পারি না।” ক্ষীণ গলায় বললেন দিদি। তখনই এক সাংবাদিক খোদ রেশন ডিলারদের সংগঠনের সম্পাদক বিশ্বম্ভর বাবুকে বিষয়টি বলেন। এক কথায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজে থেকেই এগিয়ে আসেন। চাল ডাল থেকে বিস্কুট সব কিছুই ব্যবস্থা করেন। তাঁর সাহায্য পেয়ে খুশি পিঙ্কি, আশারাও। নিজেদের হাতে আঁকা গ্রিটিং কার্ড আঙ্কেলের হাতে দিয়েছে। “ওদের যা প্রয়োজন আমরা দেওয়ার চেষ্টা করছি। পাবলিসিটি চাই না এই কাজের চাই অন্যরাও এগিয়ে আসুন । এদের পাশে দাঁড়ান।” বললেন বিশ্বম্ভর ।