ভেন্টিলেটরের সংখ্যা কম তাই গাড়ির যন্ত্রাংশ দিয়ে ভেন্টিলেটর তৈরি করছেন আফগানিস্তানের মেয়েরা

Published On:

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ আফগানিস্তানের (Afghanistan) মেয়েদের একটি দল গাড়ির যন্ত্রাংশ দিয়ে কম খরচে ভেন্টিলেটর তৈরির চেষ্টা করছে৷ তাদের এ আবিষ্কার করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে দেশটির লড়াইকে আরো গতিশীল করবে বলে আশা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের৷

পাঁচ সদস্যের ‘আফগান অল গার্লস রোবট টিম’ এর এই মেয়েদের বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে৷ যদি তারা যন্ত্রটি সফলভাবে তৈরি করতে পারে এবং সরকারের অনুমোদন পায় তবে মাত্র তিনশ মার্কিন ডলারে সেটি বাজারে ছাড়তে পারবে বলে আশা এই কিশোরীদের৷ বাজারে একটি ভেন্টিলেটরের দাম প্রায় ৩০ হাজার মার্কিন ডলার৷

বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯-এর কোনো ওষুধ বা টিকা এখনো আবিষ্কার হয়নি৷ নেই কোনো চিকিৎসাও৷ এই রোগে যেসব গুরুতর শারীরিক জটিলতা দেখা দেয় তার অন্যতম নিউমোনিয়া৷ মারাত্মক নিউমোনিয়ায় প্রায় অকেজো ফুসফুস নিয়ে রোগীর যখন আর শ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা থাকে না, তখন ভেন্টিলেটর দিয়ে তাকে বাঁচিয়ে রাখার শেষ চেষ্টা করা হয়৷ ফলে বিশ্বে এখন সবচেয়ে অমূল্য চিকিৎসা যন্ত্র হয়ে উঠেছে এই ভেন্টিলেটর৷ নামকরা সব বড় বড় গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এখন গাড়ি উৎপাদন করা বাদ দিয়ে ভেন্টিলেটর বানাচ্ছে৷

আফগানিস্তানের একটি প্রযুক্তি কোম্পানি ওই কিশোরীদের ভেন্টিলেটর তৈরিতে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে৷ কোম্পানিটির পরিচালক রোয়া মাহবুব বলেন, ‘দলটি স্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির এক দল বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির একটি নকশার ভিত্তিতে প্রাথমিক যন্ত্র তৈরির কাজ করছে৷’ অবশ্য কিশোরীদের এই দলটির খবরের শিরোনাম হওয়ার ঘটনা

ভেন্টিলেটর তৈরিতে তারা ‘টয়োটা করোলা’ মডেলের গাড়ির ইঞ্জিন ও ব্যাটারি ব্যবহার করছে৷ আফগানিস্তানে প্রথম হেরাত প্রদেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়৷ প্রতিবেশী ইরানে ভাইরাসটি মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর বহু আফগান সেখান থেকে হেরাতে ফিরে আসেন৷ করোনা সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে শুরু করতে হেরাতের গভর্নর সরকারের কাছে আরো বেশি ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান৷ ওই আহ্বানে সাড়া দিয়েই এই কিশোরীরা ভেন্টিলেটর তৈরির প্রজেক্ট শুরু করে৷

দলের সদস্য ১৭ বছরের সুমায়া ফারুকী এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের যন্ত্র তৈরিতে সব থেকে জটিল অংশ হচ্ছে সময় ঠিক করা এবং কতটুকু পাম্প করতে হবে তার চাপ নির্ধারণ করা৷ ‍প্রত্যেক রোগীর আলাদা আলাদা মাত্রার অক্সিজেন প্রয়োজন হয়৷ কিভাবে এটা করা যায় সেটা নিয়েই এখন কাজ করছি৷’

টয়োটা এবং হোন্ডা পার্টস ব্যবহৃত হয়েছে। এই গ্রুপে মেয়েদের বয়স ১৪ থেকে থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। তিনি তার ভেন্টিলেটরে টয়োটা করোলার ব্র্যান্ডের মোটর এবং হোন্ডা মোটরসাইকেলের চেইন ড্রাইভ ব্যবহার করেছেন। তারা বলে যে যদি একটি মানক ভেন্টিলেটর না পাওয়া যায় তবে আমাদের তৈরি ভেন্টিলেটর জরুরি অবস্থার মধ্যে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন এমন রোগীদের তাত্ক্ষণিক স্বস্তি দেবে।

৪৫ হাজার টাকা দামের চেয়ে কম দামের জন্য ভেন্টিলেটর সরবরাহ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গার্ল গ্যাংয়ের ক্যাপ্টেন সোময়া ফারুকীর মতে, এই দলের সদস্য হতে পেরে আমি গর্বিত। গার্ল গ্যাংয়ের এই উদ্যোগকে আফগান সরকার বেশ প্রশংসা করেছে। রাষ্ট্রপতি আশরাফ গনি এই প্রকল্প সম্পর্কে জানতে পেরে খুব খুশি এবং বলেছেন যে তিনি আমাদের সকল সম্ভাব্য সহায়তা দিতে রাজি কর্মকর্তারা।

X