‘ট্যাক্স দিন ব্যবসা করুন”, চিন থেকে গাড়ি এনে বিক্রি করা টেসলার জন্য কঠিন শর্তাবলী ভারতের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ২০২০ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল অ্যামাজন সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের মাধ্যমে জানিয়েছিলেন যে, “নতুন বিনিয়োগকে আমরা সবসময় স্বাগত জানাই….তবে সবকিছুই আইনগত নিয়মের মধ্যে থাকা উচিত।”

সুতরাং ভারতের একটি সোজা কথা হল- আমরা সব সংস্থাকেই ভালো ব্যবসার ক্ষেত্র এবং সুযোগ দেব কিন্তু, কারোর জন্যই নিয়মের লঙ্ঘন করবোনা। বর্তমানে এই নিয়মটি লাগু হয়েছে ইলন মাস্কের টেসলার ক্ষেত্রেও। যারা ইতিমধ্যেই বারংবার ভারতে তাদের বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে আসার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ কর ছাড়ের জন্য আবেদন জানিয়ে আসছে।

ইতিমধ্যেই ভারত ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন টেসলার বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে কর ছাড়ের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারত স্পষ্ট করেছে যে, বিদেশ থেকে যানবাহন নিয়ে এসে ভারতে বিক্রির ক্ষেত্রে সব সংস্থার জন্যই একই নিয়ম কার্যকর রয়েছে। পাশাপাশি তারা আরও জানিয়েছে যে, ইতিমধ্যেই আংশিকভাবে তৈরি যানবাহনের ক্ষেত্রে সেগুলিকে ভারতে “assembled” করার নিয়ম চালু রয়েছে।

এই প্রসঙ্গে Central Board of Indirect Taxes and Customs-এর চেয়ারম্যান বিবেক জোহরি জানিয়েছেন, “শুল্কগুলি পুনর্বিন্যাস করা দরকার কিনা তা আমরা দেখেছি। তবে কিছু অভ্যন্তরীণ উৎপাদন হচ্ছে। এমনকি এই শুল্ক ব্যবস্থাতেও বর্তমানে কিছু বিনিয়োগ নতুন ভাবে এসেছে।”

তিনি আরও জানিয়েছেন যে, “সুতরাং, শুল্ক ব্যবস্থা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনও বাধা নয়। বর্তমান শুল্ক কাঠামোর সাথে কিছু বিনিয়োগ ইতিমধ্যেই এসেছে। তাহলে কেন অন্যরাও আসতে পারবে না? অন্যান্য বিদেশী ব্র্যান্ডও রয়েছে যেগুলি বর্তমান শুল্ক কাঠামোর সাথে দেশে বিক্রি হচ্ছে।”

এদিকে, টেসলার কর্ণধার ইলন মাস্ক ক্রমশ জানিয়ে আসছেন যে, যে ভারতের বিশাল পরিমাণ শুল্কের জন্য টেসলার গাড়িগুলিকে দেশের বাজারে আনতে পারছেন না তিনি। বর্তমানে, ভারতে ৪০ হাজার ডলার বা তার কম দামের বৈদ্যুতিক যানবাহনের উপর ৬০% আমদানি শুল্ক এবং ৪০ হাজার ডলারের বেশি দামের বৈদ্যুতিক যানবাহনের ক্ষেত্রে ১০০% আমদানি শুল্ক আরোপ করা হয়। সুতরাং, এমবতাবস্থায়, অন্য কোনো দেশে বানিয়ে তারপরে ভারতীয় বাজারে টেসলা নিয়ে আসতে গেলে তা যে যথেষ্ট ব্যয়বহুল সেটা বোঝাই যাচ্ছে।

104763989 GettyImages 855370098 elon musk

তবে, টেসলাকে ভারতের মাটিতে তাদের বৈদ্যুতিক গাড়ি বানানোর ক্ষেত্রে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। কিন্তু, চিন থেকে তৈরি গাড়ি যে ভারতে বিক্রি করা যাবেনা তাও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সংস্থাকে। গত বছর, টেসলার অর্ধেক গ্লোবাল ডেলিভারি এসেছে চিন থেকে। এমনকি, নির্মাতারা তার রপ্তানি হাব ফার্মন্ট থেকে সাংহাইতে স্থানান্তরিত করেছে।

চিন বার্ষিক ৬,০০,০০০ টেসলার ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরি করতে চায়। এই প্রসঙ্গে পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গড়করি জানিয়েছেন, “আমি টেসলাকে বলেছি যে, চিনে তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি ভারতে বিক্রি করবেন না। বরং আপনাদের ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা উচিত এবং তা রপ্তানি করা উচিত।”

উল্লেখ্য যে, ভারত বৈদ্যুতিক যানবাহনের শিল্পে বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে চায়। পাশাপাশি, ভারত অদূর ভবিষ্যতে এই শিল্পে একটি বড় রপ্তানিকারক দেশ হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার লক্ষমাত্রা নিয়েছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর