বাংলাহান্ট ডেস্ক : ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের ৪২টি দিন পেরিয়েছে। কিন্তু এতগুলি দিন পেরোলেও সমস্যার সুরাহা কিছুই হয়নি। এরই মধ্যে বহুবার আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিষদে নিজের বক্তব্য রেখেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তাঁর সেই বক্তৃতা আন্তর্জাতিক স্তরে নজরও কেড়েছে প্রতিবার। এবার আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিষদে আবারও রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনতে দেখা গেল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে গণহত্যার মতন মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন তিনি।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ভার্চুয়াল বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র ফুর্তি করার জন্য গোটা ইউক্রেণ জুড়ে গণ হত্যালীলা চালাচ্ছে রুশ সেনা।’ একই সঙ্গে যুদ্ধের প্রায় দেড় মাস পেরোলেও আন্তর্জাতিক মহল রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় চরম হতাশা প্রকাশ করেন জেলেনস্কি। নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদের উদ্দ্যেশ্য তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, ‘আপনারা কি রাষ্ট্রপুঞ্জ তুলেই দিতে চান? সব আন্তজার্তিক আইনও কি উঠে যাবে?’
দেশের এই অবস্থায় বারবার আন্তজার্তিক মহলকে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন করেছেন প্রেসিডেন্ট। তিনি জানিয়েছেন, সেভাবে রুশ সেনা দেশের মানুষ এবং মহিলাদের উপর নারকীয় অত্যাচার চালাচ্ছে তা চোখে দেখা সম্ভব নয়। তেমনই একটি ভিডিও দেখে শিউরে উঠেছেন প্রেসিডেন্ট নিজে। সেই কারণেই নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থিত আন্তর্জাতিক মহলের কাছে সাহায্যের দাবি করে তাদের সতর্কও করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘আপনারাও সক্রিয় না হলে এমনটাই আপনাদের সঙ্গেও হবে। এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হবে অন্য দেশগুলিকে।’
স্বভাবতই রুশ সেনার আক্রমণ সেদেশে এতটাই নারকীয় হয়ে উঠেছে যে সেই গণ হত্যার নৃশংসতার সঙ্গে এশিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী আই এস এর তুলনা অবধি টেনেছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। এই সমস্ত কারণ মিলিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে রাশিয়ার বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ভারতে এসে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক সারেন রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেন ল্যাভরভ। তিনি সেখানে জানান, ‘ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতের মধ্যস্থতা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই রাশিয়ার। এতদিন ভারতের মধ্যস্ততার প্রস্তাব রাশিয়ার সামনে আনা হয়নি কারণ এখনও পর্যন্ত ভারতের অবস্থান সম্পুর্ণ নিরপেক্ষ এবং ভারত আমেরিকার চাপের দ্বারা প্রভাবিতও হয়নি।’ রাশিয়ার এহেন বক্তব্যের পরও ঠিক কতখানি এগিয়ে গিয়ে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ায় ভারত সেটাই এখন দেখার।