‘নকল’ আলুতে ছেয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাজার! জেনে নিন আসল চেনার সহজ উপায়

বাংলাহান্ট ডেস্ক : আলু কিনতে গিয়েই বিপাকে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। সাধ করে কিনতে যাচ্ছেন চন্দ্রমুখী আলু অথচ থলেতে ভরে বাড়িতে নিয়ে আসছেন হেমাঙ্গিনী আলু। কী অবাক হচ্ছেন ? আসল ঘটনাটা হল, নকল আলুতে ছেয়ে গিয়েছে বাজার। চন্দ্রমুখীর দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ‘হেমাঙ্গিনী’ আলু। খালি চোখে দেখতে দুটো আলুকে একই রকম লাগলেও স্বাদে সম্পূর্ণ আলাদা। দামে বেশ খানিকটা ফারাক থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা চুটিয়ে চন্দ্রমুখী আলুর নামে বিক্রি করছেন এই হেমাঙ্গিনী আলু।

জানা গিয়েছে, যেখানে বাজারে চন্দ্রমুখী আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে সেখানে হেমাঙ্গিনী আলুর দাম হওয়া উচিত ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি। কিন্তু, অসাধু ব্যবসায়ীরা হেমাঙ্গিনীকেই চন্দ্রমুখী বলে চালিয়ে দিচ্ছেন। গ্রামের মানুষজনদেরকে ঠকানো খুব একটা সহজ কাজ না হলেও শহরাঞ্চল বা মফস্বলের মানুষজনদের খুব সহজেই বোকা বানিয়ে রমরমিয়ে নকল আলুর ব্যবসা চলছে। হুগলির কৃষি সমবায় সমিতির এক সদস্যের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে খোলসা করে জানানো হয়েছে আমজনতাকে।

তিনি জানান, পাঞ্জাব ও জলন্ধরে চাষ করা এই মিশ্র প্রজাতির আলু তৈরি হতে যেমন কম সময় লাগে, তেমনই ফলনও হয় বেশী। যেখানে ৫০ থেকে ৬০ বস্তা চন্দ্রমুখী আলুর উৎপাদন হয় সেখানে ৯০ থেকে ৯৫ বস্তা হেমাঙ্গিনী আলু পাওয়া যায়। ভিন রাজ্য থেকেই এই আলুর বীজ আসে এই রাজ্যে। এই আলুর উৎপাদনের হার বেশি হলেও বাজারে এই আলুর চাহিদা খুবই কম। প্রথমত এই আলু ভাল করে সেদ্ধ হতে চায় না। দ্বিতীয়ত এই আলুর স্বাদ খুব একটা ভাল নয়।

এই বিষয়ে হুগলি জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শহরাঞ্চলের মানুষের কাছে বাইরে থেকে দেখে হেমাঙ্গিনী আলু এবং চন্দ্রমুখী আলু দুটোর মধ্যে ফারাক করা খুবই মুশকিল। চন্দ্রমুখী আলুর সঙ্গে জ্যোতি আলুর ক্রস ব্রিড করে তৈরি করা হয়েছে হেমাঙ্গিনী আলু। যেহেতু এই আলু হাইব্রিড তাই অল্প সময়ে ও কম খরচে চাষ করা যায়। হুগলি জেলার পুরশুড়া ও তারকেশ্বর অঞ্চলে এই আলুর চাষ হয়। চন্দ্রমুখী আলু যেখানে তিন থেকে চার মাস সময় লাগে উৎপাদন হতে। এই হাইব্রিড আলু সেখানে দেড় থেকে দু’মাসের মধ্যেই তৈরি হয়।”

Potatoes

একই সঙ্গে মনোজ চক্রবর্তী আরও জানান, দুটো আলুর খোলাই খুব পাতলা হওয়ায় দুটো আলুকে আলাদা করাই মুশকিল। যদিও চেনার উপায় বাতলে দেন তিনি। তার কথায়, চন্দ্রমুখী আলুর ভিতরের অংশটা হালকা বাসন্তী (হলুদ) রঙের হয়, কিন্তু হেমাঙ্গিনী আলুর ভিতরটা হয় সাদা। পাশাপাশি তার আরোও সংযোজন, চন্দ্রমুখি আলুর উপরে নতুন চারা চোখ থাকলে সেখানে আঙুল দিয়ে টিপলে ‘ফুট’ করে একটি শব্দ হবে, কিন্তু অন্যান্য কোনো আলুতে সেই শব্দ হয়না।


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর